বাঁশখালীর কৃতি সন্তান ডাঃ আশেকুল ইসলাম বলেন?মশা কি করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে

করোনাভাইরাস (Corona virus), তাদের পৃষ্ঠে (Surface) মুকুট-সদৃশ স্পাইক (Crown-like spikes) থাকার জন্যই তেমনটি নামকরণ করা হয়। ১৯৬০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে মানবদেহে প্রথম করোনা ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছিল। করোনাভাইরাস প্রধান চারটি উপ-শ্রেণীতে (Sub-class) বিভক্ত যা আলফা (alpha), বিটা (beta), গামা (gamma) এবং ডেল্টা (delta) নামে পরিচিত। আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত,  মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে এমন সাতটি করোনা ভাইরাস হ'ল: 229E (alpha CoV), NL63 (alpha CoV), OC43 (beta CoV), HKU1 (beta CoV), MERS-CoV, SARS-CoV, SARS-CoV-2 (COVID-19)। বিশ্বজুড়ে মানুষ সাধারণত করোনভাইরাস 229E, NL63, OC43, এবং HKU1 এ সংক্রামিত হয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কখনও কখনও বিকশিত (Express) হতে পারে এবং সংক্রমিত মানুষকে মারাত্মক অসুস্থ (Diseased) করে তুলতে পারে। কদাচিৎ (Sometimes) নতুন কোন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও হতে পারে যার ফলশ্রুতিতে একটি নতুন ভাইরাস সৃষ্ট অসুখ এর প্রাদুর্ভাব ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা মহামারির (Pandemic) কারণ ও হয়ে দাঁড়াতে পারে। এর সাম্প্রতিক তিনটি উদাহরণ হ'ল SARS-CoV-2 (COVID-19), SARS-CoV, এবং MERS-CoV।

তীব্র শ্বাসতন্ত্র জনিত সিন্ড্রোম (Severe Acute Respiratory Syndrome) করোনা ভাইরাস-২ (SARSCoV-2) বা COVID-19 দ্বারা সৃষ্ট রোগের প্রাদুর্ভাবটি ঘটে ডিসেম্বর, ২০১৯ সালে চীনের উহান শহরে (Wuhan city, China) চিহ্নিত হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ৩০ জানুয়ারি (30th January, 2020) এই প্রাদুর্ভাবকে একটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা (International Health Emergency) এবং পরবর্তীতে ১১ মার্চ (11st March, 2020) মহামারী (Pandemic) হিসাবে ঘোষণা করেছে। ২০২০ সালের ২ মে পর্যন্ত, ১৮৭ টি দেশ ও অঞ্চলে COVID-19 এ ৩.৪৪ মিলিয়ন (3.44 milloin) এরও বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে ২৩৮,০০০ (238,000) এরও বেশি লোক মারা গেছে এবং ১.০৫ মিলিয়নেরও (1.05 million) বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছে।

সাধারণত (Usually), ভাইরাসটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের (Close contact) সময় প্রায়শই কাশি, হাঁচি বা কথা বলার মাধ্যমে উৎপাদিত ছোট ছোট জলীয় ফোঁটাগুলির (Droplets) মাধ্যমে লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কাশি, হাঁচি বা কথা বলার মাধ্যমে উৎপাদিত ফোঁটা সাধারণত দীর্ঘ দূরত্বে (Long distance) বাতাসে না গিয়ে মাটিতে বা পার্শ্ববর্তী কোন বস্তুর পৃষ্ঠেতলের (Object’s surface) উপরে পতিত হয়। কেউ যদি ঐ দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ (Touch) করে এবং পরবর্তীতে তার মুখ, নাক বা চোখ স্পর্শ করে লোকটি ভাইরাসটি দ্বারা সংক্রামিত (Infected) হতে পারে। করোনা ভাইরাস সৃষ্ট অসুখটি যেহেতু মারাত্মকভাবে সংক্রামক (Deadly infectious), লক্ষণগুলি (Symptoms) প্রদর্শিত হওয়ার আগে এবং রোগের পরবর্তী পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়া সম্ভব। করোনা ভাইরাস সৃষ্ট অসুখটি কিভাবে ছড়িয়ে পড়ে (How is it spread) এবং সম্ভাব্য পরিত্রাণের উপায় (Probable curing measures) সম্পর্কিত নির্দেশনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সেচ্ছাসেবী সংঘ প্রতিনিয়ত জারি করছে বিভিন্ন নির্দেশিকা

এখন প্রশ্ন হল, যদি কোন মশা প্রথমে কোন করোনা ভাইরাস সংক্রামিত ব্যক্তিকে (Corona infected person) কামড় দেয় এবং তারপরে কোন সাধারণ ব্যক্তির (Healthy person) রক্ত খায়, তবে তারা কি করোনভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারে?

বাংলাদেশ একটি মশা প্রবণ (Mosquito prone) দেশ। অনেক গবেষণাই উঠে এসেছে, আমাদের দেশ সহ, সারা বিশ্বে মশার কামড়ের (Mosquito bite) মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া রোগজীবাণু (Disease causing pathogen) দ্বারা প্রতি বছর অন্তত অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি লোক মারা যায় এবং কয়েক লক্ষ লক্ষ গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা ঘটে। মহিলা মশা (Female mosquito) বা অন্যান্য রক্তচোষা কীটপতঙ্গ (Blood sucking insects) এর ডিম বিকাশের (Egg development) জন্য রক্তের (Blood) মধ্যে থাকা পুষ্টির (Nutrition) প্রয়োজন হয়। এখানে বলা বাহল্য, একটি মশা প্রতিবার কামড়ের সময় প্রায় ১ মাইক্রোলিটার (1 µL) পর্যন্ত রক্ত নিয়ে থাকে। রক্তচোষার সময় কোন নিদিষ্ট ভাইরাস সংক্রমিত মশা যখন অন্য কোন স্তনপায়ি প্রাণীকে (Mammals) কামড়ায়, ভাইরাসটি অতি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।  এক কথাই, ভাইরাস হোস্ট (Host) থেকে হোস্টে (Host) যেতে মশার এই জৈবিক প্রয়োজনটির সদ্ব্যবহার করে। তবে একথা সুস্পষ্ট যে, একটি মশা সংক্রামিত হওয়ার জন্য প্রথমে এটি একটি সংক্রামিত প্রাণী যেমন পাখি, বানর, বাদুর, বা গরু বা কোনও ব্যক্তিকে কামড়তে হবে। মশারা ডেঙ্গু (Dengue), হলুদ জ্বর (Yollow fever), চিকুনগুনিয়া (Chikunguniya) , জিকা (Zika) এবং রস রিভার (Ross river) ভাইরাস সহ বেশ কয়েকটি ভাইরাস সংক্রমণ করতে পারে। তারা ম্যালেরিয়াও (Malaria) সংক্রমণ করতে পারে যা প্রোটোজোয়া পরজীবীর (Protozoa) কারণে হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে এইটা নিশ্চিত যে, মশা এইচআইভি (HIV) এবং ইবোলা (Ebola) সহ আরও অনেক ভাইরাস সংক্রমণ করতে পারে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর ভাষ্য হল “নতুন করোনাভাইরাস COVID-19 একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা প্রাথমিকভাবে সংক্রামিত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচি বা লালার (Saliva) মাধ্যমে উৎপন্ন জলীয় ফোঁটাগুলির (Watery droplets) মাধ্যমে ছড়ায়; ভাইরাসটি মশার মাধ্যমে সংক্রমণ হতে পারে, এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য বা প্রমাণ নেই।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মুখপাত্র (Spoke man) তারিক জ্যাসেরেভিচ বলেছিলেন, "মশা করোনাভাইরাস সংক্রমণ করতে পারে না, কারণ ভাইরাসটি রক্তে সঞ্চালিত হয় না বরং এটি ফুসফুস এবং শ্বাস নালীর মধ্যে সঞ্চালিত হয়।“ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে নেভির (US Navy) প্রাক্তন এনটমোলজিস্ট (Entomologist) এবং আমেরিকান মশা নিধন অ্যাসোসিয়েশনের (America Mosquito Control Association) প্রযুক্তিগত উপদেষ্টা জোসেফ কনলন বলেছিলেন যে COVID-19 ভাইরাসটি মশার সংক্রমণের সম্ভাবনা “শূন্য”। কনলন আর ও বলেন, “মশা ভাইরাসটি হজম (Digest) করলেও

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ