কিশোরগঞ্জের গানের পাখী কিবরিয়া খোকন

জনি হোসেন করিমগঞ্জ প্রতিনিধিঃ 
গানকে ঘিরেই সব স্বপ্ন-সাধনা শিল্পী কিবরিয়া খোকনের । গানের মাঝেই আত্মপরিচয় খোঁজে বেড়ান এই তরুণ। বাউল গানের বাউলিয়ানায় মাতান ভক্ত-শ্রোতাদের। কিশোরগঞ্জের তরুণ এই শিল্পী তার দরাজ গলার গান দিয়ে সাড়া জাগিয়ে চলেছেন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ব্যস্ত নগর সর্বত্র। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত এই শিল্পির সুফি,মারফাতি,ভান্ডারী,ভাটিয়ালী,কাওয়ালি, পালা গান মুর্শিদী গান আর বিচ্ছেদ গানের ঝংকারই কেবল নয়, তাঁর গলার সুরে বিমোহিত হন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। শ্রোতাপ্রিয় এই বাউল গানের শিল্পীর পুরো নাম এ,কে,এম,কিবরিয়া উরফে খোকন ৷এই শিল্পী খোকন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নে মহব্বতপুর গ্রামে এক মধ্যবিও শিক্ষিত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন ৷ তার বাবা একজন অবসর প্রাপ্ত কৃষিকর্মকর্তা ৷ জনাব মোঃ শামসউদ্দীন ও মা মোছাঃ রেহেনা আক্তারের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। তারা দুই ভাই দুই বোন। তার বড় ভাই একজন উপসহকারি কৃষিকর্মকর্তা ৷ তার ছোট বোন একজন স্কুল শিক্ষক। এবং তিনি নিজেও অর্জন করেছেন বাংলাদেশের সর্বউচ্চ ডিগ্রি, ইংরেজীতে এম এ করা এই শিল্পী রচনা করেছেন ২০০ বেশি গান নিজেই সুর করে গেয়ে যাচ্ছেন । এই গুণী শিল্পী ২০০৯সালে রাষ্ট্রিয় পুষ্টপোষকতায় ইন্ডিয়া সফর করেন।কিবরিয়া খোকন বাংলা লোক সংগীতকে তুলে ধরেন আন্তরজাতিক পর্যায়ে। একাধিক বার জেলা এবং বিভাগিয় পর্যায়ে লোক সংগীতে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এ শিল্পী।নজরুলের গান করেও পেয়েছেন পুরস্কার। এ,কে,এম কিবরিয়া খোকন উরফে খোকন এখন পর্যন্ত তার চারটি অডিও ভিডিও অ্যালবাম বের হয়েছে। আরো ভিডিও অ্যালবাম বের হওয়ার পথে রয়েছে ৷ শিল্পী হিসেবে আত্ম প্রকাশের সূচনার কথা বলতে গিয়ে শিল্পী কিবরিয়া খোকন জানান, তাদের এলাকায় প্রতি বছর বিভিন্ন খোদানেওয়াজ মাজার প্রাঙ্গণে বাৎসরিক ওরশ মাহ্ফিল হয়। এই ওরশ মাহফিলে দেশের বড় বড় বাউল শিল্পীরা বাউল গান পরিবেশন করেন। বাউল গানের এই আবহই তাকে বাউল গানের প্রতি অনুরক্ত করে তুলে। তিনি আরো বলেন আমি ঘরানা বৈঠকি থেকে গানের শুরু শুরুটা করি১৯৯৭সালে যখন তিনি এস এস সি পরিক্ষার্থী তখন থেকে থেকে তিনি গান শুরু করেন তিনি বলেন কোন উস্তাদ আমাকে হাতে কড়ি দেয়নি,তবে প্রেরণা দিয়েছেন অনেকেই তাদের মধ্যে পাগল পানু,শিল্পী নরুল ইসলাম ভাই,মাসুদ মামা,মোবারক ভাই সহ আরো অনেকে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা যুগিয়েছন আমার প্রিয় সংগঠন চিশতিয়া শিল্পীগোষ্টির সকল সম্মানিত সদস্যর সেই পরিবেশ তাকে গান শেখার উৎসাহ যোগায়। এভাবেই গানের সুর আর কথার সঙ্গে পরিচয় ঘটে কিবরিয়া খোকনের ৷ গান গাইতে গিয়ে কিবরিয়া খোকনের পরিচয় ঘটে করিমগঞ্জ শিল্পকলা পরিষদের সাবেক উস্তাদ সুরজিত সরকার মানিক দার সাথে। তিনি কিবরিয়া খোকনকে রাগ-রাগিনির কিছু ধারনা নেন এই গুনী শিল্পী ৷ এর পরেই কিবরিয়া খোকনের প্রথম অডিও অ্যালবাম বের হয় ভালবাসার পাখি। জননন্দিত গিতীকার জুয়েল কিশোরের কথা ও তার নিজের সুরে বিচ্ছিদি গানের এলব্যামটি ।এই এলব্যামের একটি গান,তুমি যদি রাজি থাক চল ঢাকা যাই একটা ছোট খাটো বাসা রাইখা জীবনটা কাটায়,এই গানটি সারা দেশে হিট ও শ্রোতা প্রিয়তা পেয়েছে ৷ তুমি যদি রাজি থাক চল ঢাকা যাই,একটা ছোট খাটো বাসা রাইখা জীবনটা কাটায় এই গানটি এখন মানুষের মুখে মুখে। এরেই মধ্যে বাজারে কিবরিয়া খোকনের একের পর এক বেশ কয়েকটি ভিডিও সিডি প্রকাশ করে বাংলা ফোকমিডিয়া নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি ইউটিউবে রিলিজ হয়েছে তার মর্ডাণ ফোক গানের মিউজিক ভিডিও প্রাণের প্রিয়া,চাঁদরুপসি, ফুলবিছানা,মন্ডলবাড়ির­ মাইয়া শিরোনামে, বেশ কিছু গান রিলিজ হওয়ার অপেক্ষায়। শিল্পী কিবরিয়া খোকনের দ্বিতীয় এবং নিজের লেখা ও সুরে প্রথম অ্যালবামের নাম ‘ জুয়েল কিশোরের কথায় ও সুরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে,তুমি যদি রাজি থাক চল ঢাকা যাই,একটা ছোট খাটো বাসা রাইখা জীবনটা কাটায়। ভালোবাসার পাখী নিয়ে বের করা এই ভিডিও অ্যালবামটি তুমি যদি রাজি থাক চল ঢাকা যাই একটা ছোট খাটো বাসা রাইখা জীবনটা কাটায় ৷ এই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তার প্রকাশিত এই চারটি অডিও ও ভিডিও অ্যালবামের বাইরে আরো ভিডিও অ্যালবামের কাজ করছে শিল্পী কিবরিয়া খোকন । এই দু’টি ভিডিও অ্যালবামের মধ্যে প্রথমটি হলো দয়াল ভরসা দ্বিতায়টি হলো ভালোবাসার পাখী তৃতীয়টি হলো প্রাণের প্রিয়া চতুত্বটি হলো চাদঁ রুপসি ৷ শিল্পী কিবরিয়া খোকন বলেন, আমি একজন বড় গায়ক হতে চাই। বাংলার লোক সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই। এটিই আমার স্বপ্ন ও ধ্যান-জ্ঞান। এজন্যে তিনি সকল শ্রেণিপেশার মানুষের দোয়া, সহযোগিতা ও ভালবাসা কামনা করছি ৷

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ