উচ্চশিক্ষা, অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ এবং সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে
বাংলাদেশের মানুষদের আর্থ–সামাজিক প্রেক্ষাপটে সম্পদে পরিণত করাই প্রিমিয়ার
ইউনিভার্সিটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা। তাই শিক্ষার প্রয়োজনীয় সবধরনের
অত্যাধুনিক ব্যবস্থা যেমন রয়েছে তেমনি উচ্চতর গবেষণায়ও আছে নানারকম
সুযোগ–সুবিধা। এ কারণে সবার প্রথম পছন্দ প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি। তাই
প্রতিবছর এই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে প্রতিযোগিতা চলে নগরীর সেরা সেরা
শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সবার জন্য আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে ২০০১ সালে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে ২০০২ সালে প্রিমিয়ার
ইউনিভার্সিটি যাত্রা শুরু। উদ্যোক্তা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক
মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মাত্র তিনটি বিভাগ দিয়ে যাত্রা শুরু করা
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ১৪টি বিভাগ। প্রবর্তক মোড়ের দু’টি ভবন ছাড়াও
দামপাড়া, হাজারি লেইন, জিইসি–তে আরও তিনটি নতুন ভবন। প্রিমিয়ার
ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে ১৯৮ জন নিজস্ব শিক্ষক এবং অতিথি শিক্ষক মিলে প্রায়
সাড়ে তিনশত শিক্ষক প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা
প্রদান করছেন। এসব শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই বিদেশে ডিগ্রিপ্রাপ্ত, আবার
অনেকেই পিএইচডি হোল্ডার। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষায়
একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান প্রসঙ্গে জানান, ‘শিক্ষার মানের
ক্ষেত্রে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির অর্জন অসামান্য, প্রকৃতপক্ষে গগণচুম্বী।
উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত বার কাউন্সিল পরীক্ষায় যেখানে
পাশের হার মাত্র ৩০ শতাংশ, সেখানে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের
পাশের হার প্রায় ৯০ শতাংশ। এছাড়াও বর্তমানে রাষ্ট্রের বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা দায়িত্বরত রয়েছে। দেশের গন্ডি
পেরিয়ে বিদেশেও বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
বাণিজ্য, প্রকৌশল,ইংরেজি, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত
শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া এই ইউনিভার্সিটির অনেক
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পিএইচডি–সহ উচ্চতর গবেষণায় নিযুক্ত।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০১০ অনুসারে এই ইউনিভার্সিটি স্থায়ী
ক্যাম্পাসের সব শর্ত পূরণ করায় ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রণালয় প্রিমিয়ার
ইউনিভার্সিটি পাঠদানে নিয়োজিত প্রতিটি ভবনকে অনুমোদিত স্থায়ী ক্যাম্পাস
হিসেবে ঘোষণা করেছে অনেক আগে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কর্তৃক ঘোষিত
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভবনসমূহে যে–সব বিষয়ে শিক্ষা
প্রদান করা হচ্ছে, প্রতিটি বিষয়ও ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত। তাই শিক্ষার
মানসম্মত পরিবেশ, গবেষণার আধুনিক সুবিধা, গরিব–মেধাবীদের জন্য কোটি কোটি
টাকার শিক্ষাবৃত্তি এসব কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় প্রিমিয়ার
ইউনিভার্সিটি। তাই প্রতিদিন এখানে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা বসে।
সম্প্রতি প্রবর্তক মোড়ের প্রধান ক্যাম্পাসে প্রতিদিন চোখে পড়ে এ দৃশ্য।
ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী নাঈমা সুলতানা তারিন, সালমা করিম, সাদেকুন নুর
সিকদার, মো. ওসমান গণি ও মণিষা দে ভর্তি হতে আসেন এই ইউনিভার্সিটিতে। তারা
ভর্তির কারণ সম্পর্কে জানালেন, উচ্চশিক্ষার জন্য চট্টগ্রামে প্রথম পছন্দ
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি। সবশ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের
উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করে এই ইউনিভার্সিটির উচ্চশিক্ষিত শিক্ষক এবং দক্ষ
কর্তৃপক্ষ।
এই ইউনিভার্সিটির সাফল্যের কথা তুলে ধরে সিএসই–র চতুর্র্থ বর্ষের
শিক্ষার্থী জোছনা আকতার, মো. রাশেদুল আলম, অনন্যা বড়ুয়া, তৃতীয় বর্ষের
ছাত্র মো. ইফতেখার আলম, ইইই বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র প্রকৌশলী মো. ইকবাল
হোসেন জানান, এখানকার অনেক শিক্ষার্থী
কোরিয়া, জাপান, সুইডেন, ফ্রান্স,ডেনমার্ক, স্পেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র–সহ
বিভিন্ন দেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। এর মধ্যে এক জন
ফ্রান্স এবং আরেকজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পিএইচডি অর্জন করেছে। এক
ছাত্র ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি–র মতো বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে
ফেলো হিসেবে কাজ করছে। আর একজন শিক্ষার্থী বিশ্বসেরা মাইক্রোসফ্টে
প্রোগ্রামার হিসেবে কর্মরত আছে।
এখানকার লাইব্রেরি এবং ল্যাবও অত্যাধুনিক উল্লেখ করে ডেপুুটি
লাইব্রেরিয়ান মো. কাউসার আলম জানান, ‘প্রবর্তক ক্যাম্পাসে কেন্দ্রিয়
লাইব্রেরিসহ সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আইন বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, বিজনেস
অনুষদ ও অর্থনীতি এই চারটি বিভাগে আন্তর্জাতিক এবং উচ্চশিক্ষার সহায়ক
সবধরনের বই রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে আধুনিক অনলাইন লাইব্রেরি সুবিধা যেখানে
রিসার্চ আউটপুটকে আর্কাইভ করার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রিয়
লাইব্রেরি ও সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে প্রায় ৬০,০০০ বই, ১৫০০ জার্নাল এবং
৭০০ অডিও ভিজ্যুয়াল শিক্ষাসামগ্রী আছে।
আইটি বিভাগের প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান ল্যাবরেটরি সুবিধা সম্পর্কে
বলেন, প্রায় ৫০০ কম্পিউটার নিয়ে সিএসই–তে ৪টি, ইইই–তে ১টি,আর্কিটেকচারে
১টি, বিবিএ–তে ২টি, অর্থনীতিতে ১টি, আইনে ১টিসহ সর্বমোট ১০টি কম্পিউটার
ল্যাবরেটরি রয়েছে। এছাড়া ইইই ও কেমিস্ট্রি বিভাগে ২টি সার্কিট ল্যাব, ১টি
কমিউনিকেশন ল্যাব, ১টি মেশিন ল্যাব, ১টি ফিজিক্স ল্যাব এবং ১টি কেমিস্ট্রি
ল্যাব ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা। আর আর্কিটেকচার বিভাগ ব্যবহার করে ৮টি
ডিজাইন ল্যাব ও ২টি জুরিবোর্ড ল্যাব।
আধুনিক সুযোগ–সুবিধার পাশাপাশি এখানে মেরিট
স্কলারশিপ, দরিদ্র–মেধাবী–মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রতি বছর প্রায় দেড় কোটি
টাকা ওয়েভার প্রদান করা হয়। এসবের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে
দক্ষ করে গড়ে তুলতে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি
সাহিত্য, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান–সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে
শিক্ষার্থীদের সচেতন করার লক্ষ্যে নিয়মিত আলোচনা অনুষ্ঠান, সেমিনার এবং
কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এসব কারণে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়
হয়ে উঠেছে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি।
0 মন্তব্যসমূহ