বাঙ্গালীর ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফার্স্ট নাইট নয়

সব্যসাচী ইমন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
আজ থার্টি ফাস্ট নাইট।এই রাত্রের জন্য চারিদিকে কতো আয়োজনের ছড়াছড়ি,কতো হৈ হুল্লোড় দেশব্যাপী,কতই না তাড়াহুড়া বিভিন্ন দর্শনীয় স্হানের উদ্দেশ্যে যাত্রার জন্য।

অবশ্যই থার্টি ফার্স্ট নাইট আমাদের সংস্কৃতি কিংবা ঐতিহ্যের কোনো অংশই না।
এটা পুরোপুরি প্রাশ্চ্য দেশের মানুষের সংস্কৃতি। তদুপরি আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ তরুণ সমাজরা এই দিনটি সর্বোচ্চ আনন্দ ভোগাভোগি করে পালন করতে মরিয়া।

মজার কথা হচ্ছে এই আনন্দ ভোগাভোগিটা বেশিরভাগ তরুণ সমাজ নেশাই কিংবা কামে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেছে।  
এই রাতে জিয়া উদ্যান,সোহরাওয়ার্দী উদ্যান,ওসমানী উদ্যানে বেশ্যাদের দেহ ব্যবসাটা ভালোই চলবে।
পবিত্র সমুদ্র চরে পার্টির আয়োজনের নামে দুজন বিপরীত লিঙ্গের মানুষের মাখামাখি হবে,চুমুতে চুমুতে জর্জরিত হবে প্রেমিকার নগ্ন শরীর।
শিল্পপতি কিংবা পয়সাওয়ালার সন্তানেরা সারারাত বিদেশি ড্রিংকস পানে আর নৃত্যে মগ্ন থাকবে।
এই রাতে কতো দেশি/বিদেশী মদের বোতল খালি হবে,কতো গাঁজার স্টিকের ক্ষয় হবে,কতো প্রেমিক জুটি কামে লিপ্ত থাকবে কিংবা কতো মেয়ে তার সতীত্ব হারাবে তার সঠিক হিসেব নেই।
এটাই হচ্ছে বর্তমান প্রজন্মের থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের প্রতিচ্ছবি।
 অবশ্যই গুটিকয়েকজন স্বাভাবিকভাবে পালনের মাধ্যমে দিনটা অতিবাহিত করে।

গত বছরের থার্টি ফার্স্ট নাইটের একটা ঘটনা বলি:-
ভার্সিটি পড়ুয়া চার বন্ধু মিলে বাসায় থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে উন্নত স্বাদের ডিনারের আয়োজন করেছে।সাথে ডি,জে পার্টি ও আরো নানান আয়োজন।
এই আয়োজনে অংশগ্রহনের জন্য তাদেরই একই ডিপার্টমেন্টের নওশিন নামের এক বান্ধবীকে দাওয়াত দিলো। নওশিন বন্ধুদের আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠলো। মাকে নানান মিথ্যা কথা বলে নওশিন রাত দশটায় বাসা থেকে বের হয়ে আসলো বন্ধুদের দাওয়াতে আসার জন্য।চলে আসলো নওশিন তার চার বন্ধুর বাসায়। নওশিনের উপিস্হিতিতে বন্ধুরা মহা খুশি। সবাই মিলে শীঘ্রই ডিনারটা সেরে ফেললো তারপর বিদেশি ড্রিংকস পান করলো। প্রথমে নওশিনের আপত্তি থাকলেও বন্ধুদের অনুরোধে না করতে পারলো না সে। এবার ডি,জে পার্টি আরম্ভের পালা।সাউন্ড বক্সে শারিকার গান চলছে আর নওশিনকে মাঝখানে রেখে বন্ধুরা নেচে চলছে। নওশিন ও মাঝেমাঝে কোমর হেলিয়ে যাচ্ছে। সবাই ক্লান্ত হয়ে পরলে সাউন্ড অফ করে দেই।রাত এখন প্রায় একটা। নওশিন বাসায় চলে আসার কথা ভাবে।বন্ধুদের কথা এতো রাতে বাসায় যাওয়া সম্ভব না রাস্তায় গাড়ি পাওয়াটা মুশকিল হয়ে পরবে তাছাড়া দুরের জায়গা হেঁটে যাওয়াটাও অসম্ভব।তার চেয়ে বরং আজকে রাতটা আমাদের বাসায় থেকে যা।নওশিন ভাবলো এতো রাতে বাসায় যাওয়াটা কষ্টকর।থেকে যাওয়াটাই বেটার হবে।
নওশিনকে একরুমে বেডে রেখে বন্ধুরা অন্য রুমে চলে আসলো তারা। চার বন্ধু মিলে ভিন্ন একটা প্ল্যান করলো।এতো বড় সুযোগ হাতছাড়া করা যায়না।
রাত যখন দুইটা বাজে বন্ধুরা মিলে নওশিনের রুমে ঢুকল।নওশিন তখন ঘুমের ঘুরে মগ্ন। একবন্ধু গিয়ে নওশিনের শরীরে হাত দিলে নওশিন চেঁচিয়ে ঘুম থেকে উঠে গেলো। তোরা এখানে কি?
জড়িয়ে ধরলো নওশিনকে গিয়ে আরেকজনে!
কিরে করছিস কি এটা? প্লিজ আজকে না করিসনা নওশিন।সমস্যা কি? আমরা তো বন্ধুই।আরে কিচ্ছু হবেনা।
নওশিন বুঝতে পারলো এদেরকে আর বাঁধা দিয়ে আটকানো যাবেনা।অতঃপর নওশিন ও আর বাঁধা দেইনি। একজন একজন করে চার বন্ধুই তাদের ইচ্ছে মিটালো।
বন্ধুদের সাথে খুব ফ্রিলি চলাফেরা করলেও কখনো নওশিন তার শরীরে ভেজাল স্পর্শের সুযোগ দেইনি কোনো ছেলেকে।
এই প্রথম কোনো পুরুষের সম্পূর্ণ স্পর্শ পেলো নওশিন,প্রথমবারের মতো কেউ নওশিনের সতীত্ব কেড়ে নিলো। এটা ভাবতেই নওশিনের বেঁচে থাকতে মন চাইনা এখন।
এভাবেই কেটে যায় নওশিনদের থার্টি ফার্স্ট নাইট।
নওশিনের কি উচিত ছিলো এতো রাতে ছেলে বন্ধুর বাসায় যাওয়াটা?
অনেকেই বলতে পারেন বন্ধুর প্রতি বিশ্বাস ছিলো বলে।অতিমাত্রায় কাউকে বিশ্বাস করতে নেই।যার প্রমাণ নওশিনই।
মেয়েরা এক্ষেত্রে সোচ্চার হউন।আপনার পাশের ছেলে বন্ধুটি থার্টি ফার্স্ট নাইটের এই সুযোগে আপনার দেহটা ভুগিয়ে নিবে।

এই রাতে এরকম কতো জঘন্য ঘটনা ঘটবে তার ঠিক হিসেব নেই।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো অপসংস্কৃতি আমার দেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে,সদ্য যৌবনে পদার্পণ করা শতো মেয়ে তার ভার্জিনত্ব হারাচ্ছে।
এরকম চলতে থাকল আস্তে আস্তে প্রাশ্চ‍্য দেশের মতো খোলামেলা যত্তসব খারাপ অভ্যাস আমাদের মাঝে চলে আসবে।
সেক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষিত তরুণ সমাজকে সর্বাধিক সচেতন হতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ