সরলে খুনি নুর মুহাম্মদ ও তার সহযোগিদের ফাঁসির দাবীতে এলাকা বাসীর মানববন্ধন

সরল প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম বাঁশখালী সরলের আতঙ্ক,ভূমি ও জলদস্যু, মানব পাচারকারী, ইয়াবা সম্রাট, কুখ্যাত ডাকাত ও ডাকাতের গডফাদার, ডজন মামলার আসামী ও শিশু ধর্ষক খুনি নুর মোহাম্মদ ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্ছ শাস্তি ফাঁসির দাবীতে সরলের সর্বস্তরের জনসাধারণ মানববন্ধন করেছে।

সোমবার (২৪ আগষ্ট) সকালে এ দরগা রোডস্থ দক্ষিন সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন নুর মোহাম্মদের অত্যাচারে অধিষ্ঠিত তার নিজ এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে বক্তারা নুর মুহাম্মদ ও তার সহযোগিদের সরল এলাকায় আধিপত্তর বিস্তার, প্রকাশ্যে অস্ত্র মহড়া, অস্ত্রের মুখে এলাকার জনসাধারণের জিম্মি, ইয়াবা ব্যবসা, নারী কেলেঙ্কারি, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্ম তুলে ধরেন।

মানববন্ধনে নুর মোহাম্মদের আপন ভাতিজা কলিম উল্লাহ্ তার অপকর্ম বিষয়ে বলেন, আমার চাচা নুর মোহাম্মদ একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্বে বাঁশখালী থানাসহ বিভিন্ন থানাতে ডজন ডজন মামলা আছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মধ্যরাতে আমার চাচা নুর মোহাম্মদ আমাদের পার্শের এলাকা মরহুম মাস্টার কবির আহমদ মিয়াজীর ছেলে আবুল কালাম মিয়াজীকে তার সঙ্গি বাহিনী নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দক্ষিণ সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ওষুধের দোকানে গুলি করে হত্যা করে রাতের অন্ধকারে বাড়ীতে চলে আসতে দেখে আমি অভিভূত হয়ে যাই। আমি কালাম হত্যার সত্যটা প্রকাশ করার কারণে আমার চাচা আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। সেই আবুল কালাম হত্যার পর থেকে আমি আর বাড়ীর মুখ দেখতে পাইনি।

আবুল কালাম হত্যা মামলার বাদী আবুল হাছান বলেন, সরলে অাধিপত্তর বিস্তারকে কেন্দ্র করে নুর মোহাম্মদ গ্রুপ ও ওসমান গ্রুপে গুলাগুলি হয়। কি কারণে জানিনা নুর মোহাম্মদ ও তার সহযোগিরা আমার বাড়ীতে ডুকে আমার মা হালিমা,ভাবি শাহনাজ ও চাচি হোসনে আরাকে গুলি করে। উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আমার ছোট্ট ভাই আবুল কালাম বাশঁখালী থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। যার মামলা নং ২৮২, তারিখ, ১০-১১-১৮ইং। আমার ছোট্ট ভাই, আবুল কালামকে এ মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য নুর মোহাম্মদ কয়েকবার প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। আমার ছোট্ট ভাই মামলা তুলে না নেওয়াতে নুর মোহাম্মদ ও তার সহযোগিরা আমার ভাইকে কয়েকবার আক্রমন করেন।

সর্বশেষ, ২০১৯ সালে ১৫ এপ্রিল রাতে আমার ভাইপোত ইসকান্দরের ডায়রিয়া চিকিৎসার জন্য আমি আমার ছোট্ট ভাই আবুল কালামকে দক্ষিণ সরল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়স্থ  আমার ফার্মেসীতে ঔষধের জন্য পাঠাই। প্রতি মুহূর্তে আমরা গুলির শব্দ শুনে বের হলে স্বচক্ষে দেখি আমার ভাইকে গুলি করে রক্তাক্ত অবস্থায় দোকানের ভিতরে রেখে নুর মোহাম্মদ তার সঙ্গি বাহিনী নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় এলাকা বাসীর সহায়তায় মুমূর্ষুময় অবস্থায় আমার ভাইকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করে। আমার ভাই হত্যার বিচার চেয়ে আমি নিজে বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় হত্যা মামলা করি।যার মামলা নং ১১৮/১৭-৪-১৯। এর পর থেকে নুর মোহাম্মদ আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। কিছুদিন পূর্বে  নুর মোহাম্মদ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য শের আলী র‍্যাব-৭ পতেঙ্গার সাথে ডাকাতি প্রস্তুত চলাকালীন সময়ে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়। তার পর থেকে নুর মোহাম্মদ কেন জানিনা আমার উপর পূর্বের চেয়ে আরো বেশি তৎপর হয়ে ওঠে। কিছু সাংবাদিক ভাইদের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে মনগড়া খবর ছড়াচ্ছে। আমি প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সর্বমহলের এসব ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের প্রতি বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি। আমি চাই আবুল কালাম হত্যা মামলা বিচার হোক,খুনিদের ফাঁসি হোক।

এ বিষয়ে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে বলেন, সরলের মাস্টার কবির আহমদ একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রবীন শিক্ষক। সে আমার ও শিক্ষাগুরু। 

 সরল ২ নং ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য সেলিম বলেন, সরলের মাষ্টার কবির আহমদ একজন শিক্ষক ছিলেন।অবসর জীবনে এ মরহুম মাস্টার কবির আহমদ একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারঁ পরিবারের ছেলেরা খুব ভালো। আবুল হাসান তার বাবার প্রতিষ্ঠিত স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি ও স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন।

এ মামলার বিষয়ে বাশঁখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে ওসি জানান, সরলে আবুল কালাম হত্যা মামলার আসামী ইতিমধ্যে ৬ জন কে গ্রেপ্তার করি। বাকীদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ