বি,এন ডেস্কঃ
যশোরের বুকভরা বাঁওড়ে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলট নিহত
হয়েছেন। রবিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এদুর্ঘটনা ঘটে। দুঘর্টনায় নিহতরা হলেন
স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজুল ইসলাম ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ।
প্রশিক্ষণ বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে রবিবার রাত থেকে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
দুই পাইলটের লাশের অংশবিশেষ ছাড়াও বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের কিছু অংশ ইতিমধ্যে
উদ্ধার হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস যশোর স্টেশনের সহকারী পরিচালক পরিমলকুমার কু-ু এই তথ্য
নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় অধিবাসী, যারা গত রাত থেকে বাঁওড়পাড়ে ভিড়
জমিয়েছেন, গণমাধ্যমকর্মীদের তারাও একই তথ্য জানাচ্ছেন।
নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সোমবার সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে থেকে
সেখানে তল্লাশিতে অংশ নিচ্ছেন বলে যশোর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আবুল
বাশার মিয়া জানিয়েছেন।
কে-৮ ডাব্লিউ প্রশিক্ষণ বিমানটি রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে যশোরের
মতিউর বিমানঘাঁটি থেকে উড়ে যায়। এতে দুইজন বৈমানিক ছিলেন। তারা হলেন
স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজুল ইসলাম ও স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ।
উড্ডয়নের কিছুসময়ের মধ্যে উড়োজাহাজটি বুকভরা বাঁওড়ে বিধ্বস্ত হয়। পরে
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে দুই বৈমানিকের
মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
যশোর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক আলমগীর পাঠান জানান, স্কোয়াড্রন লিডার
এনায়েত ও স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজ প্রশিক্ষণ বিমানটি নিয়ে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ
পর টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার
খবর আসে।
কোতয়ালী থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) আবুল বাশার জানান, বিমানবাহিনীর
প্রশিক্ষণ বিমান পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে বুকভরা বাঁওড়ে
গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
“রাতে লাশের কিছু অংশ এবং বিধ্বস্ত বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা
হয়। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ডুবে যাওয়া বিমানের অবস্থান চিহ্নিত করতে
বেগ পেতে হয়। ফলে ভোর চারটার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে খুলনা
থেকে নৌ-বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এলে সকালে আবার তল্লাশি শুরু
হয়।”
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল কু-ু বলেন, রাতে তারা বাঁওড়ে তল্লাশি চালিয়ে দুই বৈমানিকের দেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী চান্দুটিয়া বাজারের ব্যবসায়ী শ্যামলকুমার সিংহ
জানান, রাত নয়টার পর তিনি বিকট শব্দ শুনে আরিচপুর বাজার-সংলগ্ন বুকভরা
বাঁওড়ের দিকে যান। দূর থেকে তারা দেখতে পান, একটি বিমানের কিছু অংশ বাওড়ের
তীর থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে পানিতে ভাসছে।
“কেউ কেউ নৌকা নিয়ে বিমানের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা সেখানে কাউকে
পায়নি। গোটা এলাকায় পেট্রোলজাতীয় কোনো তেলের গন্ধ ভাসছিল। বৃষ্টি আর
অন্ধকারের কারণে কিছুই ঠিকভাবে দেখা যাচ্ছিল না।”
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল কুণ্ডু জানান, উদ্ধার অভিযান চলবে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলছিল।
/ দৈনিক সংগ্রাম
0 মন্তব্যসমূহ