চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা হামলা এক মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত

বিএন ডেস্কঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্ট রুল নিষ্পত্তির নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এই মামলায় খালেদার জামিনের বিষয়ে গত ২৪ জুন শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য ছিল।
আদালতের আদেশের সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার এ মামলায় গত ২৮ মে খালেদা জিয়ার ছয় মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরের দিন ২৯ মে জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত। একইসঙ্গে, জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ৩১ মে নির্ধারিত দিনে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন জামিন স্থগিত করা হয় এবং মামলাটি শুনানির জন্য ২৪ জুন দিন ধার্য করা হয়। পরে ২৪ জুন শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন।
দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। সেই থেকে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ওই মামলায় আপিলের পর খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। যেটি গত ১৭ মে বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আরো পড়ুন :
জীর্ণশীর্ণ খালেদা জিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১২ জুন ২০১৮
কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে ভালো নেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এখন তিনি জীর্ণশীর্ণ চেহারার একজন মানুষ। সত্তরোর্ধ্ব একজন বয়স্ক মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে ধরনের বিশেষ পরিচর্যা প্রয়োজন, বেগম খালেদা জিয়া তা না পাওয়ায় তার বয়স যেন আরো বেড়ে গেছে। তিনি সম্প্রতি ট্রানজিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাকে (টিআইএ) আক্রান্ত হয়েছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে চার পাতার একটি মেডিক্যাল পর্যবেক্ষণ দিয়ে এসেছেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুত এমআরআই করে দেখার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন তার ব্রেইন কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি দেখার জন্য। এরপর তিন দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তাকে কোনো হাসপাতালেই নেয়া হয়নি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার দ্রুত সুচিকিৎসা না হলে যেকোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন তিনি। তার সাথে দেখা করে এসেছেন এমন সূত্রগুলোর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেগম জিয়ার ওজন কমে গেছে, বাম হাত ওপরে তুলতে পারেন না। আগে তো একটু হাঁটতে পারতেন, এখন তা-ও পারেন না। কথা বলার ভঙ্গি সহজ নয়, মুখে বাঝে (তবে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকেরা বলেছেন যে, তিনি কমিউনিকেশন করতে পারছেন)। এমনিতেই তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।
অনেক আগে থেকে তিনি আর্থ্রাইটিস, রিউমাটোলজির মতো জটিল রোগে ভুগছেন। বর্তমানে হাতের আঙুলগুলো কালো হয়ে গেছে, পা ফুলে গেছে। পায়ে এসেছে পানি। পায়ে চাপ দিলে আঙুল ভেতরে দেবে যাচ্ছে। চোখে রয়েছে প্রচণ্ড ব্যথা, লাল হয়ে গেছে দুই চোখ। সুস্থ চোখের যেটুকু পানি সারাক্ষণ থাকার কথা, তার চোখে সে রকম পানি নেই। অনেক কমে গেছে। বাইরে থেকে আর্টিফিশিয়াল পানি দিতে হয় চোখে। সুচিকিৎসা করা না হলে চোখ দুটির স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, অস্টিও আর্থ্রাইটিস হলে যেকোনো মানুষের চোখের পানি এমনিতেই কমে যায়।
টিআইএ চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া পড়ে গিয়ে ৫ থেকে ৭ মিনিট জ্ঞান হারানোর লক্ষণটি ভালো নয়, সামনে তার জন্য আরো বিপদ অপেক্ষা করছে। সেটা হবে বড় ধরনের বিপদ।
যারা কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেছেন সেই সূত্রগুলো আরো জানিয়েছে, তাকে যেখানে থাকতে দেয়া হয়েছে সেখানে ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করে। চার দিকের পরিবেশ খুবই খারাপ। সারাক্ষণ স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। চার দিকে যে পরিবেশ তাতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া মশার আক্রমণে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন যেকোনো সময়।
সূত্রঃ ডিি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ