বিএন ডেস্কঃ
কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে 
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানাতে নগ্ন পায়ে 
অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে প্রশাসন ভবনের সামনে এ অবস্থান নেয় তারা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন 
খান ফেসবুক স্ট্যাটাসে নগ্নপায়ে প্রতিবাদের ঘোষণা দেন। ফরিদ উদ্দিন খান তার
 ফেসবুক ওয়ালে লিখেন ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের 
দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও লাঞ্চনার প্রতিবাদে নগ্নপায়ে 
অফিসে যাব। সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত জোহা স্যারের মাজারে দাড়িয়ে 
নিরবতা পালন করবো। খালিহাতে, নগ্নপায়ে এবং নিরবে যে কেউ অংশ নিতে পারবে। 
কোন স্লোগান না, বক্তৃতা না, না কোন রাজনীতি। এই নগ্নপায়ে নিরব প্রতিবাদ 
বোঝাবে আমরা আর সভ্য সমাজের নাগরিক নয়, যেখানে বাক স্বাধীনতা আছে, যেখানে 
ন্যায় সঙ্গত প্রতিবাদের সুযোগ আছে।’
এ ঘটনায় সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জোহা 
চত্বরে আসতে থাকে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষকরাও আসতে
 থাকেন। এতে উপস্থিত হন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রায়হানা শামস 
ইসলাম, শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউট বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার বানু, আরবি 
বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, ফার্মেসী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক 
ড. মো. বায়তুল মোকাদ্দেসুর রহমান, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং 
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ছাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
এবিষয়ে অবস্থান নেয়া শিক্ষকরা জানান, দেশব্যাপি কোটা সংস্কার আন্দোলনে 
যোগ দেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় যে দমন নিপীড়ন চলছে তাতে আমরা শঙ্কিত 
এবং মর্মাহত। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে নিপীড়নের শিকার 
শিক্ষার্থীদের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করেন।
শিক্ষকরা আরো জানান, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের বাক স্বাধীনতা, 
ন্যায্য দাবি প্রকাশের সুযোগ থাকা অপরিহার্য। একটি সভ্য গণতান্ত্রিক 
রাষ্ট্রে কেবলমাত্র সুস্থ বিতর্কের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যায়। পাশবিক
 শক্তি দিয়ে তা দমন করার চেষ্টা অনভিপ্রেত। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত 
পীড়াদায়ক।
এরপর সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর 
রহমানের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে চলে যেতে 
নির্দেশ দেন।
এসময় সোমবার শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার 
বিষয়ে অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের 
ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
প্রক্টর লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো লিখিত আকারে জমা দেয়ার 
পরামর্শ দেন। এরপর শিক্ষার্থীদেরকে জোহা চত্ত্বর থেকে চলে যাওয়ার জন্য ধমক
 দেন। শিক্ষার্থীরা অবস্থান অব্যহত রাখতে চাইলে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের 
আবারও ধমক দিয়ে বলেন, ‘এই ছেলে যাবি না কেন? তোদের দাবি কি?’
রাবিতে ব্যতিক্রমি আন্দোলনের ডাক দেয়া অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানকে 
অবস্থান স্থলে আসতে দেয়া হয় নি। তাকে অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি কে বিএম 
মাহবুবুর রহমানের কক্ষে আটকে রাখা হয়। সহকর্মীকে আটকে রাখার বিষয়টি স্বীকার
 করেন মাহবুবুর রহমান।
এদিকে অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্যারিস রোডে শাখা 
ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর 
নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

0 মন্তব্যসমূহ