তুরস্কের কাছে সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ হস্তান্তর

বিএন ডেস্কঃ
বর্তমান সময়ের সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ এর দুটি বিমান তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার টেক্সাসের ফোর্ড ওর্থে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তুরস্কের বিমান বাহিনীর কাছে দুটি এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান হস্তান্তর করা হয়। খবর ডেইলি সাবাহর।

তুরস্ক এফ-৩৫ লাইটনিং ২ কার্যক্রমের অন্যতম অংশীদার। তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প ৫ম প্রজন্মের এফ-৩৫ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য এই বিমানগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকবে এবং ২০১৯ সালের নভেম্বরে তুরস্ককে পাঠানো হবে।

তুরস্ক ১৯৯৯ সাল থেকে নয়টি দেশের একটি সংস্থা যারা এফ-৩৫ যৌথ স্ট্রাইক ফাইটার প্রকল্পের একটি অংশীদার। তুরস্ক ২০২০ সালের মধ্যে ৬ টি এফ-৩৫ বিমান পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই ৬ টি বিমানের মধ্যে ৪ টি যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সাল পর্যন্ত অবস্থান করবে এবং অপর ২টি তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় মালাতায়া বিমান ঘাঁটিতে রাখা হবে।

তুরস্ক ২০২৪ সালের মধ্যে প্রথম ৩০ টি বিমানের ২৪ টি পাবে। দেশটি প্রাথমিকভাবে ১০ টি এফ-৩৫ বিমানের অর্ডার দিয়েছে।

টেক্সাসে অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় প্রতিরক্ষা শিল্পের ডেপুটি গভর্নর সের্দার ডিমিরেল এ কথা বলেন যে, তুরস্ক এফ-৩৫ যৌথ স্ট্রাইক ফাইটার প্রোগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এবং উল্লেখযোগ্য সম্পদ বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরো বলেন, যদিও তুরস্ক উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) এর বিশ্বস্ত এবং অন্যতম সহযোগী হিসেবে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা প্রদানে অব্যাহত ভুমিকা রাখবে। এফ-৩৫ বিমানগুলো দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং তুর্কি জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখবে।
লকহেড মার্টিনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্লিন হিউসন বলেন, তুরস্কের কাছে সর্বপ্রথম এফ-৩৫ হস্তান্তর করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র সম্মানিত বোধ করছে।

তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, এফ-৩৫ উন্নত দক্ষতা এবং প্রযুক্তির সাথে বৈশ্বিক নিরাপত্তার উন্নতির জন্য একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে।

তুরস্কের বিমান বাহিনীতে এফ-৩৫ বিমান প্রবেশের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ৫ম প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান তাদের বহরে যুক্ত হলো।



আরো দেখুন : সামরিক শক্তি বাড়াতেই এস-৪০০ কিনছে তুরস্ক

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলায়মান সোয়লু বলেছেন, তার দেশের নিরাপত্তা রক্ষা করার অধিকার অনস্বীকার্য এবং এজন্য রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কোনো প্রচেষ্টা বাদ রাখবে না আঙ্কারা।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নিজের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করার ক্ষমতা তুরস্কের নেই। এ অবস্থায় রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে তুরস্কের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করবে। যেসব দেশ তুরস্ককে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে বাধা দিচ্ছে তারা তুরস্কের সামরিক শক্তি দুর্বল করতে চায়।’

সোয়লু আরো বলেন, ‘এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা হবে তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এবং এ নিয়ে রাজনীতি করার কিছু নেই। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনলে তুরস্কের অবস্থান শক্ত হবে।’

বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইংরেজি ভাষার দৈনিক হুররিয়াত পত্রিকা অজ্ঞাত কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে একটি খবর দিয়েছে যাতে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তুরস্ক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যস্থা কিনলেও যেন ব্যবহার না করে।

এস-৪০০ হচ্ছে একটি উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা ৪০২ কিলোমিটার দূরের শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান কিংবা ড্রোনকে চিহ্নিত ও ধ্বংস করতে সক্ষম। এর আগে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শুধুমাত্র চীন ও ভারতের কাছে বিক্রি করেছে রাশিয়া।

২০১৫ সালে আমেরিকা তুর্কি সীমান্ত থেকে পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে নেয়ার পর আংকারা নিজের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার চেষ্টা করছে। এজন্য গত বছরের শেষ দিকে তুরস্ক রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। চুক্তি অনুসারে ২০১৯ সালের শেষ দিকে কিংবা ২০২০ সালের প্রথম দিকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ শুরু করবে মস্কো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ