১৫টি বছর স্বপ্নই থেকে গেল আব্দুল হাকিম সড়ক পাকার মুখ দেখল না


জন্ম আমার নব্বইয়ের দশকে সেই অজ পাড়া-গাঁয়ে। সেই সময়টাতে বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন (বিএনপি) বেগম খালেদা জিয়া, থানার এমপি ছিলেন (আওয়ামীলীগ) সুলতান কবির চৌধুরী ও ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন (বিএনপি) আব্দু ছবুর। তখন আমার গাঁয়ের প্রধান আব্দুল হাকিম সড়কটি ছিল মাটির।
যখন আমার একটু একটু বুঝার মত ক্ষমতা হয়, গাঁয়ের অন্যান্য ছেলেদের সাথে এদিকওদিক দৌড়াদৌড়ি করতাম। তখনো আব্দুল হাকিম সড়কটি মাটির দেখছিলাম। পরে ১৯৯৭ সালে চৌধুরী ঘাট থেকে গুলশানের দোকান পর্যন্ত আব্দুল হাকিম সড়কটি ইটের রাস্তা করা হলেও বাকি অংশ ছিল আগের মত মাটির। সেই সময়ে বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন (আওয়ামীলীগ) শেখ হাসিনা, থানার এমপি ছিলেন (বিএনপি) জাফর ইসলাম চৌধুরী ও ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন মাহফুজুর রহমান।
২০০৩ সালে এসে আব্দুল হাকিম সড়কটি সম্পূর্ণ ইটের রাস্তায় রূপান্তর হওয়া দেখার সৌভাগ্য হলেও আজ ১৫টি বছর পরেও আব্দুল হাকিম সড়ক পাকা দেখার সুযোগটা হল না। তখনকার বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন (বিএনপি) খালেদা জিয়া, থানার এমপি ছিলেন বরাবরি (বিএনপি) জাফর ইসলাম চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন বরাবরি আব্দু ছবুর ও ইউপি মেম্বার ছিলেন আব্দুল হক। সেই তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, আমাদের রাস্তাটা পাশে আরো বড় করে পাকা হবে, তা আজও স্বপ্নই থেকে গেল। সেই আগেরই মত একদিক থেকে গাড়ী গেলে অন্যদিক থেকে আসা গাড়িটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।
দুঃখের বিষয় হল, আমাদের গাঁয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগে পর্যন্ত নামকরা জনপ্রতিনিধি ছিলেন, এমনকি (বিএনপি) জাফর ইসলাম চৌধুরী তৎকালীন সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। ঐ সময়তো আমি ভোটার ছিলাম না। কেন এবং কিসের আশায় জনগণ তাদেরকে ভোট দিয়ে আসনে বসিয়েছিলেন, তার সামান্য আশাও কি পূর্ণ করতে পেরেছিলেন? জনগনতো তাদের কাছে দুবেলা খাবারের আশা করেনি, করেছিল উন্নয়নের আশা। তা কি তারা করেছিল?
আজ যদি তাদের কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়, জনপ্রতিনিধি হয়ে জনগনের কি কল্যাণে এসেছিলেন? সেই জবাব কি দিতে পারবে কেউ?
২০১১ সাল থেকে বর্তমান ৭টি বছর পর্যন্ত সরকার ক্ষমতায় থেকেও সরকার দলীয় এমপি, চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা কেন আব্দুল হাকিম সড়কটি পাকা করতে পারল না? বলেনতো এই ৭ বছরে নিজ উদ্যোগে এলাকার কি উন্নয়ন হাতে নিয়েছেন?
তারা কি আসনে বসে জনগনের মাথায় লবণ রেখে বড়ই খাচ্ছেন? নাকি হাইব্রিড হওয়ায় সরকারের কাছে দুর্দশার চিত্র তোলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না? সুযোগ না পেলে ছেড়ে দেন, প্রকৃত আওয়ামীলীগের মধ্যে যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তির অভাব নেই। নির্লজ্জের মতে নামের প্রতিনিধি হওয়ার চেয়ে যোগ্যতা সম্পন্ন কাউকে সুযোগ দেন। আমি মনে করি সরকারের নিকট এই দুর্দশারর অবস্থা তোলে ধরার মত যোগ্যতা আপনাদের নেই। মাথাগুনতি ৫০০ টাকা করে ভোট কিনে, সেই টাকা সরকারের বরাদ্দ থেকে সুদে আসলে উসুল করবেন, তার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দেন। এখন জনগণ উন্নয়ন চাই, ভোটের আগে ৫ বছরের বিনিময়ে ৫০০ টাকা চাই না।
আপনাদের মত নামের জনপ্রতিনিধিরা কখনো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুনাম চান না। না হয় অজপাড়া গাঁ সেই আগের মত অজপাড়া গাঁয়ে থেকে যেত না!
বিঃ দ্রঃ কয়েকমাস আগে আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান তারা ফেসবুকে আব্দুল হাকিম সড়কের বরাদ্দের ব্যাপারে একটা নকশা দেখালেও এখনো পর্যন্ত তা বাস্তবয়নে কোন সাড়াশব্দ শুনা যাচ্ছে না। শুনেছি, আব্দুল হাকিম সড়কের বরদ্দের টাকা যথাযথ হওয়ায় কেউ টেন্ডার নিচ্ছে না লাভ কম হবে বিধায়।
লেখকঃ মোঃ মনছুর আলম, 
রায়ছটা, খানখানাবাদ, বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ