খানখানাবাদে স্কুলের প্রবেশ মুখে গোয়ালঘর, দুর্গন্ধে টেকা দায়


মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম): সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে গড়ে তোলার হয়েছে দুটি গোয়ালঘর। প্রায় ৩০ বছর ধরে এই দুইটি গোয়ালঘরে গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, স্কুলটির প্রবেশমুখে গরুর মল-মূত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। উৎকট গন্ধের কারণে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে কাপড় ধরতে হয়। অস্বস্তিকর ও নোংরা পরিবেশের মধ্যেই ক্লাস করতে হয় তাদের। কখনো কখনো শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

এমন চিত্র বাঁশখালীর ১১৭নং উত্তর খানখানাবাদ আব্দুচ ছালাম স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। খানখানাবাদ আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০০ গজ পশ্চিমে এই বিদ্যালয়টির অবস্থান। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৫ জন।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রবেশমুখে ১৫টি গরু এলোপাতাড়ি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। গোয়ালঘরের সামনে বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিদ্যালয়ের বারান্দার সামনে আবদ্ধ এবং সরু জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার। জায়গা অত্যন্ত সরু হওয়ায় জাতীয় দিবসগুলো পালন করার সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাছাড়া একটি খেলার মাঠও নেই।

শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিদ্যালয়ের সামনে গোয়ালঘর স্থাপন করে গরু পালন করে আসছেন মাইজপাড়ার মৃত আইচ্ছা মিয়ার ছেলে জামাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন। প্রায় সময় দুর্গন্ধ এত বেশি তীব্র হয় যে, বিদ্যালয় ভবনে বসে থাকাও দায় হয়ে পড়ে। শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা বন্ধ করেও দুর্গন্ধ এড়ানো যায় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১১৭ নং উত্তর খানখানাবাদ আব্দুচ ছালাম স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চপল দাস একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্ষাকালে গরুর মল-মূত্রের কারণে স্কুলের প্রবেশপথ পিচ্ছিল হয়ে যায়। আমি বিষয়টি আমার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। এ প্রেক্ষিতে শিক্ষা অফিসার মহোদয় এসে গোয়ালঘরের মালিকদের সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু গরুর মালিকরা কর্ণপাত করেননি। বিদ্যালয়ের সামনের জায়গাটা স্কুলের দাতা সদস্যদের, তারা কামাল ও জামালকে ওই জমি দান করেছেন।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট সুলতান-এ সবুর চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি বারবার উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করার পরও প্রতিকার পাইনি। জামাল আর কামাল আমার নানার কারবারি ছিলেন। তাদেরকে জায়গাটি দান করা হয়েছে। তাই বলে তো এভাবে গোয়ালঘর তৈরি করে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করতে পারেন না তারা।’

জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নুরুল ইসলাম একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘খুব অস্বস্তিকর পরিবেশ। আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি। জায়গা তো তাদের নিজের। এ জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছি না। আর নিজস্ব জায়গা হলেও বিদ্যালয়ের সামনে গোয়ালঘর বেমানান। আমি তাদেরকে বিষয়টা বারবার বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আপনি তাদের একটু বুঝান। আবদ্ধ জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি শহীদ মিনার নির্মাণের পর আর যাইনি।’

সূত্র: একুশে পত্রিকা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ