সারাদেশে করোনার লাশ দাপনে অর্থ সহায়তা দেবেন বাঁশখালীর সন্তান ড. জমির সিকদার

মোহাম্মদ এরশাদঃ
দেশের চলমান ভয়াবহ করোনা ভাইরাসে দিন দিন যেমন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি মৃতের সংখ্যাও। করোনা ভাইরাসে মৃতদের মরদেহ নিজের বাসায় পড়ে থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা। আবার হাসপাতালের মর্গে মরদেহের স্তুপ, কেউ লাশ নিতে আসছেনা, কোথাও কোথাও সন্তানেরা মা বাবার লাশ রেখে পালাচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে 'লাশ অন্যের, দাপনের কাপন আমার। আমিই মানুষ, মানবিকতাই আমার ধর্ম।' এই রুঢ় মানবিকতাকে লালন করে সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া লাশ দাপনে অর্থ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিলেন ডা. জমির উদ্দিন সরকার। এই মানবতাবাদী মানুষটি বাঁশখালীর সুযোগ্য সন্তান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও সাবেক সহ-সম্পাদক ও একজন মানবিক নেতা।

বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ৩ টি সেবা সংস্থা মার্কাজুল ইসলাম, রহমতে আলম সমাজ সেবা সংস্থা ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। ওরা সারা বাংলাদেশের করোনার মরদেহ WHO নিয়ম মেনে লাশ সৎকার করে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে মারা যাওয়া লাশ দাপন করার জন্য আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সকালে রহমতে আলম সমাজ সেবা সংস্থা এর চেয়ারম্যান আতাউর রহমানকে প্রাথমিকভাবে এক লক্ষ টাকার চেক প্রদান করেন ড. জমির উদ্দিন সরকার। এ সহায়তা দেশে করোনায় মারা যাওয়া লাশ দাপনের জন্য ব্যয় হবে এবং সহায়তা বৃদ্ধির প্রয়োজন হলে তিনি নিজের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে অর্থসহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

ড. জমির উদ্দিন সিকদার প্রতিবেদককে বলেন, 'যেই সন্তানের জন্য পিতা-মাতা সারাজীবন কষ্ট করল, পিতা-মাতা মরার পর সেই সন্তান পিতা-মাতার কাছেই যেতে চায়না। যেখানে সারা পৃথিবীতে নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে কিংবা নিজের সন্তানদের উপার্জনের অর্থে দাপনের কাপন কিনতে পারছেন না সেইখানে আমার কস্টার্জিত টাকা দিয়ে যদি আমার দেশের মানুষের লাশের সৎকার করতে পারি এর চেয়ে সুখ আমার জীবনে আর কি হতে পারে। এমন কিছু কাজ করতে পারলে আনন্দে শিহরিত হই, কারণ আমি মানুষ। তাই আমি সেই দায়িত্বটা আজ নিজেই নিয়েছি।'

তিনি আরো বলেন, 'আমি ব্যাক্তিগতভাবে আগ্রহী হয়ে আমার বেতন ও সঞ্চিত অর্থ FDR ভেঙে লাশ দাপনের জন্য অর্থ যোগান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তারই পরিপেক্কিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগদ টাকার একটি চেক রহমতে আলম সমাজ সেবা সংস্থার চেয়ারম্যান এর নিকট হস্তান্তর করলাম। এই অর্থ সহায়তা নিয়মিত থাকবে ইনশাআল্লাহ, যতদিন করোনার লাশ দাপনের কাজ অব্যাহত থাকবে।'

ইতোমধ্যে ড. জমির উদ্দিন সরকার বাঁশখালী উপজেলার পিতৃহারা নয় সদস্যের এক অভুক্ত পরিবারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বাঁশখালীতে করোনায় গৃহবন্ধী অসহায় মানুষদের মাঝে ৫০মণ চাল বিতরণ ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।

বাঁশখালীর বাইরেও ড. জমির উদ্দিন মানবিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনা সংকটে ঢাকার উত্তরায় অসহায় ২শ দুস্থ পরিবারের মাঝে তিনি গত মার্চ মাসের নিজ বেতন থেকে ১ লক্ষ টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উত্তরা শাখা এবং ক্যাপ্টেন মনছুর আলী মেডিকেল ও হাসপাতালে কর্মরত সকল ডাক্তার-নার্সদের মাঝে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পিপিই সহ আনুসাঙ্গিক সরাঞ্জমাধি প্রদান করেন। সম্প্রতি, ডা. জমির উদ্দিন তার উত্তরাস্থ বাসভবন এলাকায় দৈনিক উত্তরা নিউজের কর্মরত প্রতিবেদকগণের মাঝে উপহার স্বরূপ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী তুলে দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ