স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও পায়নি মুক্তিযুদ্ধ সার্টিফিকেট

১৯৭১ সালের স্বাধীনতার অগ্রনায়ক সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানাধীন ৪ নং বাহারচড়া ইউনিয়নস্থ ইলশা গ্রামের হাধু চৌধুরী বাড়ীর মরহুম অাবদুল কুদ্দসের ছেলে নাজেম উদ্দীনের স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও মেলেনি মুক্তিযুদ্ধ সার্টিফিকেট। নাজেম উদ্দীন চৌধুরী সাথে কথা বলে জানতে পারি, তিনি ১৯৬৯ সালে এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়া চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়াস্থ বলির হাট এলাকায় গৃহ শিক্ষক হিসাবে অবস্থান করেন। তখন তিনি ৩৪ জন   রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী সামরিক  শাসক অাইয়ুব সরকারের অানীত "অাগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার" বিরুদ্ধে গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে যোগ দেয়  ও সাতকানিয়া থানার বাজালিয়া গ্রামের স্বপন চৌধুরীর নেতৃত্বে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফার সমর্থনে আন্দোলনরত অবস্থায় অন্যান্য ছাত্রদের মত তিনি পুলিশের হাতে অনেক নির্যাতিত হন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা যারা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি ছিল তাদের মুক্তির জন্য সংগ্রাম রত ছিলেন। সাহসী বিপ্লবী ছাত্র নেতা নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও ক্ষণিকের জন্য সংগ্রাম থেকে পিছপা হয় নাই। জাতির জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য অধিকার আদায়ের জন্য তিনি জান দিতেও প্রস্তুত ছিলেন। ১৯৭১সালের ২৫ মার্চ শুক্রবার দিবাগত রাত যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয় তখন মানুষ দিশেহারা হইয়া চারিদিকে ছুটাছুটি করতে থাকে এসময় তিনি বাকলিয়া বলিরহাট এলাকা থেকে নৌকায় করিয়া কর্ণফুলী নদীর পাড় হইয়া বোয়ালখালী থানার কালুরঘাট সেতুর পূর্বে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযোদ্ধা বীর বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ হানাদার বাহিনীর আক্রমণে কালুরঘাট প্রতিরোধে বীরমুক্তিযোদ্ধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সাল ব্যাটেলিয়ান কয়েকদিন ধরে বিরামহীন ভাবে চলে অবশেষে ১৯৭১ সাল কালুরঘাটে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর সাথে কালুরঘাট ব্রিজ এলাকা সকলের জন্য মরণ-পণ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়।  তাতেও দুঃসাহসী ছাত্র নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করিয়া তার সাহসিকতার পরিচয় দেয়। 
পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রায় তিন মাস পূর্বে বোয়ালখালী থানা হইতে নিজ এলাকা বাঁশখালীতে আসিয়া বর্তমান উপজেলার পূর্ব দিকে পাহাড়ে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের সহিত মিলিত হইয়া মুক্তিযোদ্ধা বখতেয়ার নূর সিদ্দিকী, নূরুল কবীর চৌধুরী, সুলতানুল কবির চৌধুরী, ও আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন। ছাত্র নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন চৌধুরীর মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের কথা এখনো এলাকার স্বনামধন্য হিসেবে সকলের নিকট সমাদৃত। কিন্তু তার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট এবং মুক্তিযোদ্ধা সনদ এখনো জুটেনি।  বর্তমান সরকার মুক্তযোদ্ধাদের নাম তালিকা শুরু করলে সেখানে যাচাই বাছাই কমিটিতে বীর  মুক্তিযোদ্ধা নাজেম উদ্দীন চোধুরীর নাম অন্তভূক্ত করলেও এখনো কোন সার্টিফিকেট পায়নি। মুক্তিযুদ্ধ যাচাই বাছাই কর্তৃক প্রেরিত তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং-মুবিম/প্র-০/জেলা/উপজেলা কমিটি/৭১/২৩৩-১৫৭৭, তারিখ ০৬/০৪/২০১১খ্রিঃ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলর স্মারক নং ০০.২৯১.০০০.০৯.১২.০১০.২০১১.৫৩১.তারিখ- ০৬/১১/২০১১ খ্রিঃ মূলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি বিগত ৩০/০৬/২০১১ ইং খ্রিঃ স্মারক নং- চট্টগ্রাম/বাঁশ/২০১১-৫০৪ মূলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নাজেম উদ্দীন চৌধুরীর নাম প্রকাশ করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ