পাখির ডাক্তার!

মেডিকেলের পঞ্চম বর্ষে পড়ি, কোনো লেকচার বা টিউটোরিয়াল ক্লাস হয় না। দিন-রাত শুধু হাসপাতালের ওয়ার্ডে রোগী দেখতে হয়। মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, নাক-কান-গলা-চক্ষু—নানান ওয়ার্ডের মধ্যে সবচেয়ে মজার ছিল শিশুরোগ বিভাগ। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে দিন কাটানোর মজাই আলাদা। 

প্রতিদিন ওদের জন্য চকলেট নিতে হতো। চকলেটের বিনিময়ে আমরা ওদের এটা-সেটা পরীক্ষা করে দেখতাম। কখনো আমাদের সাদা অ্যাপ্রোন দেখে কোনো কোনো বাচ্চা কান্না জুড়ে দিত। আবার কখনো কখনো আমরা নিজেরা ‘জোকার’ সেজে মায়ের কোলে কান্নারত বাচ্চাকে শান্ত করতাম। স্বভাবতই বাচ্চাগুলো উৎসুক হয়ে থাকত, আমরা কাছে গেলেই স্টেথিসকোপ ধরে টানতে চাইত। 

কিন্তু একটা বাচ্চা ছিল একদম আলাদা। সে শুয়ে থাকত অন্য দিকে তাকিয়ে। আমরা কাছে গেলে ফিরেও তাকাত না, ডাকলে সাড়া দিত না। আমরাও নাছোড়বান্দা, ওকে কথা বলাবোই! 

একদিন গিয়ে দেখি গোমড়ামুখ পিচ্চিটার মুখে দুষ্টুমি মাখা হাসি। হাসির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখলাম অবাক করা কাণ্ড! বাচ্চাটা তার হাতের স্যালাইনের লাইন খুলে তার পাশে রাখা একটা খেলনা পাখির পেটে ঢুকিয়ে রেখেছে! নিজে নিজে পাখির ওপর ডাক্তারি করতে পেরেই তার মুখভরা হাসি!
এই হাসিমুখগুলো আমাদের খুব প্রিয়। 

লেখক: পঞ্চম বর্ষ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ