দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বাঁশখালীতে উৎপাদিত চা পাতা

মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনঃ বাঁশখালীর পুকুরিয়া বৈলগাঁও চা-বাগানে কচি-কোমল পাতা গজানো শুরু করায় চা বাগানে বিরাজ করছে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। তবে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়াতে নিজস্ব উদ্যোগে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি সরবরাহ করাতে নানা ভাবে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানান চা বাগান কর্তৃপক্ষ । অপরদিকে চা-বাগানের সড়কটির কাজ এখনো শেষ না করাতে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চা-বাগান পরিদর্শনে আসা দর্শকদের । জানা মতে, বাঁশখালী বৈলগাঁও চা বাগান ক্লোন চা উৎপাদন করায় এই বাগানটি বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানে রয়েছে। বাঁশখালীতে অবস্থিত ৩ হাজার ৪ শত ৭২.৫৩ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই চা-বাগানটি । ১৯১২ সালে ইংরেজরা বাগানটি শুরু করেন। তখন বাগানের ম্যানেজার ছিলেন মি: হিগিন। মাত্র ৮ (আট) একর চা-বাগানটি বাংলাদেশ চা-বোর্ড ১৯৯২ইং তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগানটি ব্যবস্থাপনার জন্য রাগীব আলীর স্বত্তাধিকারী বাঁশখালী টি কেম্পানীর নিকট হস্তান্তর করেন। ব্র্যাক চা-বাগানটির মালিকানাস্বত্ত্ব গ্রহন করার পর ২০০৪ সালে চা-কারখানা চালু করে। অতঃপর চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগানের মালিকানা ব্র্যাক, বাঁশখালী টি কোম্পানী লিঃ এর নিকট থেকে গত ২০১৫ সালের ৫ নবেম্বর থেকে সিটি গ্রুপ পরিচালিত ফজলুর রহমান গং এর ভ্যান ওমেরান ট্যাংক টার্মিনাল (বাংলাদেশ) লিঃ এবং ইন্টারন্যাশনাল ওয়েল মিলস্ লিঃ ক্রয় করেন। সারা বাংলাদেশে ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে বাশঁখালী বৈলগাঁও চা বাগানটি গুনগত মান অনুযায়ী ১২ তম এবং চট্রগ্রাম অঞ্চলের মধ্যে ৩য় স্থানে রয়েছে । বর্তমানে চা বাগান এলাকায় ৬৩৮ একর আবাদী এবং ৫০ একর জায়গায় আগর চাষ করা হয়েছে। চাঁদপুর বেলগাঁও চা-বাগানে শতকরা ৯০ ভাগ ক্লোন চা এবং চায়ের গুনগত মান ভালো হওয়ায় বাজারে এ বাগানের চায়ের কদর বেশি। 

বাঁশখালী বৈলগাঁও পুকুরিয়া সরকার চা বাগানের ম্যানেজার আবুল বাশার জানান, বাঁশখালীর এই বিশাল চা বাগানের চা পাতা সারা দেশে সুখ্যাতি রয়েছে। এই মানের জন্য চা বাগানের কর্মরতরা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন যত বৃদ্ধি পায় সরকার রাজস্ব তত বেশি পায়। বর্তমানে চা পাতার বিক্রিত অর্থ থেকে সরকার ১৫% হারে ভ্যাট পান। তবে তিনি বাগানের কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, চা বাগানের চার পাশে ঘেরা বেড়া না থাকায় প্রতিদিন হাতির পাল চা বাগানে ছুটে আসে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীরা প্রায় সময় শংকিত অবস্থায় থাকে। তিনি সরকারী এই রাজস্ব আয়ের অন্যতম চা-বাগানকে আরো বেশি পৃষ্টপোষকতার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ