বাঁশখালীতে বিচারপ্রার্থী অপমানিত হয়ে বিষপানে আত্মহত্যা নাকি হত্যা? নেপথ্যে কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বজন বলীর বাড়ির হোসেন আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ ব্যক্তির বিষ পানে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত ১৮ অক্টোবর শুক্রবার বিষপানে গুরুতর অবস্থায় তাকে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন বলে জানা যায়। এই ঘটনার নেপথ্যে কারা, তা নিয়ে পুরো উপজেলায় চলছে নানান জল্পনা কল্পনা।      

অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত হোসেন আলীর সাথে তার আপন ভাই অন্তি মিয়া (৭০) এর দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসতেছে। দুজনেই একই বাড়ির পাশাপাশি বাসিন্দা। এরই ধারাবাহিকতায় দুই পরিবারের মধ্যে প্রায় সময় তুমুলঝগড়া হয়। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে মৃত হোসেন আলীর ছেলে আরফাত (২০) এর সাথে তাদের প্রতিপক্ষ অন্তি মিয়ার ছেলে কফিল (৩২) দ্বয়ের মধ্যে একই বিষয়কে কেন্দ্র তাদের পার্শ্ববর্তী ফখিরা বাজারে পুনরায় কথা-কাটাকাটি সহ একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে কফিল ক্ষিপ্ত হয়ে তার সহযোগী হুমায়ুন সহ আরো ৪/৫ জন একত্রে মৃত হোসেন এর বাড়িতে এসে তার গৃহপালিত ৫০-৭০ হাজার টাকা দামের গরুটি জোরপূর্বক নিয়ে বিক্রি করে দেয়। ঘটনার দিন গত ১৮ অক্টোবর বেলা ১১ টার দিকে মৃত হোসেন আলী স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিনের কাছে বিচার  নিয়ে যান। বিচারের সময় কফিল জানায়, ফখিরা বাজারে আরফাতের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় সে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, উক্ত আঘাতের চিকিৎসার টাকা জোগাড়ের জন্য মৃত হোসেন আলীর গরুটি বিক্রি করেন। তখন মৃত হোসেন আলী চিকিৎসার জন্য খরচ হওয়া টাকা বাদ দিয়ে গরু বিক্রির বাকি টাকা ফেরতের দাবী জানান। এতে কফিলের সহযোগী হুমায়ুন ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক ঐ চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মৃত হোসেন আলীকে একশত বার কানধরে ওঠাবসা করান। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান সহ কপিল ও তার সহযোগিরা তাকে মারধরের চেষ্টা চালালে তিনি দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে অপমানে বিষ পান করেন বলে জানা যায়।

তবে স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু ব্যক্তি জানান, কফিল, হুমায়ুন সহ অভিযুক্তরা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন এর লালিত গুন্ডা। তারা এলাকায় প্রায় সময় এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আসলে তাদের ভয় মুখ খুলতে কেউ সাহস পাই না। এই ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, এই নিয়ে চলছে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা।

এদিকে মৃত হোসেন আলী'র পরিবারের দাবী, তাকে বিচারের দিন সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন, কপিল, হুমায়ুন সহ তাদের সহযোগিরা মিলে মারধর সহ অপমান করে বিষপান করিয়ে হত্যা করেন। এই বিষয়ে ঐ সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলেও, সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।      

এই ঘটনায় মৃত হোসেন আলী'র স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বাদীনি হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদন, কফিল, হুমায়ুন সহ আরো বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে ২০ অক্টোবর রবিবারে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি বাঁশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ কামাল হোসেন বাঁশখালী নিউজকে নিশ্চিত করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ