বাঁশখালীতে বিয়ের প্রলোভনে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নুরুল হকের ছেলে প্রবাসী মোঃ এনামুল হকের বিরুদ্ধে একই এলাকার শামশু মিয়া'র মেয়ে প্রবাসী লিপি বেগমের নিকট লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সহ যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছে বলে ভুক্তভোগী লিপি বেগম নিশ্চিত করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, লিপি বেগম ওমানের একটি বিউটি পার্লারে চাকুরী করতেন। সেই সুবাধে প্রবাসী এনামুলের সাথে প্রবাসী লিপির পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এনামুল বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে লিপি আক্তারের যাবতীয় সঞ্চিত টাকা সহ ২০১৫ সালের পর থেকে যাবতীয় বেতনের টাকা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি লিপি বেগমের মালিক (আরবাব) সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন এমনকি তিনিও জানতেন এনাম লিপিকে বিয়ে করবে। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে প্রবাসী এনাম কাউকে না বলে ভিসা বাতিল করে দেশে পালিয়ে আসার সময় লিপি বেগম তার মালিকের মাধ্যমে তাকে ওমান বিমানবন্দরে আটক করেন। ঐ সময় এনাম লিপি বেগমকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লক্ষ টাকা মত আত্মসাৎ করার কথা স্বীকার করে এনামের পিতা নুরুল হক ও তার মামা নজরুল সহ মিলে দেশে লিপির বাবা শমশু মিয়ার সাথে লিখিতভাবে চুক্তিনামার মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা কাবিন মূলে বিয়ে করবে বলে আপোষ দিয়ে ছাড়া পায়। দুজন দেশে এসে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করলেও শেষ হয়নি এনামের প্রতারণার লক্ষ্য। চুক্তিনামা ও আপোষের কথা বাদ দিয়ে লিপিকে ভয়ের মুখে ২ লক্ষ টাকা নগদ ও ২ লক্ষ টাকা বাকিতে মোট ৪ লক্ষ টাকার দেনমোহরে বিয়ে সম্পাদন করে। 

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, তাদের বিয়ে পরবর্তী সময়ে লিপি বেগমের উপর এনাম ও তার পরিবারের নির্যাতন থেমে ছিল না। হুমকির মুখে লিপি বেগমকে জোরপূর্বক বাধ্য করে বাঁশখালী থানায় তার পিতা শমশু মিয়ার বিরুদ্ধে ৪ লক্ষ টাকা দেনার বিষয়ে মিথ্যা একটি অভিযোগ করায় এ এনাম। এছাড়াও লিপি বেগমের নামে ইসলামি ব্যাংকে থাকা নগদ ২ লাখ ৯০ হাজার টাকাও এ এনাম তুলে নেয়। গেল ঈদের রাতে পাথাও রাইড করার জন্য লিপি বেগমকে এ এনাম বাইক কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। এতে লিপি বেগম নিঃস্ব অবস্থায় যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় মারধর সহ শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে মধ্যরাত দেড়টার দিকে ঘর থেকে বের করে দেয়। লিপি বেগম ঐ সময় নিরুপায় হয়ে এলাকার এক সর্দারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয় বলে জানা যায়। এছাড়াও এনামুলের বিরুদ্ধে ২ বার লিপি বেগমের পেটের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগও রয়েছে।

এব্যপারে এনামুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। এছাড়াও তিনি আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি সমাধান করার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানান। এদিকে ভুক্তভোগী লিপি বেগম জানান, এনাম ও তার পরিবারের ভয়ে এখন সে এলাকায় পর্যন্ত যেতে পারছে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ