দেশের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋণ ভুলে যাবেন না: রাষ্ট্রপতি

কর্মজীবনে গিয়ে দেশের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ভুলে না যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে তাঁরা কার্যকর অবদান রাখবেন বলেও দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি।
আজ মঙ্গলবার বুয়েটের ১১ তম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় একক কোনো সত্তা নয়। শিক্ষার্থীরাই এর প্রাণ আর সম্মানিত শিক্ষকেরা হলেন আত্মা। কাজেই শিক্ষার্থীদের উচিত হবে না বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ভুলে যাওয়া।’
রাষ্ট্রপতি দেশ থেকে মেধা পাচার বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছেন এবং তাঁদের মধ্যে অনেকেই আর দেশে ফিরে আসছেন না। এ কারণে দেশ ও জনগণ তাঁদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে আরও বেশি অবদান রাখতে তাঁদের সবার প্রতি আহ্বান জানান।
নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সব সময় আন্তরিক হতে গ্র্যাজুয়েটদের পরামর্শ দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘তোমরা চাকরির সুবাদে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকো না কেন, নিজ মাতৃভূমিকে কখনো ভুলবে না। সর্বদাই বড় হবার স্বপ্ন দেখবে এবং দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবার এবং নিজের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাবে।’
বুয়েটকে দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সময়ের দাবি পূরণে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা এগিয়ে নিতে আরও অবদান রাখবেন।
দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি জনবান্ধব ও টেকসই করতে সহায়তা করার জন্য প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১’ গ্রহণ করেছেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়নকাজ জনবান্ধব ও টেকসই করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে।
সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে তাঁদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল উৎক্ষেপণের পর বাংলাদেশ এখন মহাকাশ স্যাটেলাইট জগতের গর্বিত অংশীদার। তিনি বলেন, সরকার বহুমুখী পদ্মা সেতু, বিভিন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, ঢাকা মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ ক্ষেত্রে বুয়েট প্রকৌশলীদের অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে হবে।
সমাবর্তনে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট, পোস্টগ্র্যাজুয়েট এবং পিএইচডি ডিগ্রি সনদ গ্রহণ করেন। ১৮ জন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন।
অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বুয়েটের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. রফিক উল্লাহ, অধ্যাপক শেখ সেকেন্দার আলী, অধ্যাপক মো. মাহাবুবুল আলম, অধ্যাপক মো. সাইফুর রহমান ও অধ্যাপক ফরিদা নিলুফার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
/প্রথম আলো!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ