একুশের দীপ্ত চেতনায় স্বাধীনতা অার সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা

বছর ঘুরে অাসে একুশ জাগিয়ে তোলে বাঙ্গালি জাতিসত্তার উদ্দীপ্ত চেতনা, ঐক্যবদ্ধ করে অামাদের, সৃষ্টি করে বাঙ্গালি চেতনার উন্মেষ।
একুশের চেতনা বাঙ্গালি ও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি, মূলভিত্তি তথা প্রেরণার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য রফিক,সফিক,সালাম, জাব্বার, বরকত সহ ছাত্রজনতার যে ত্যাগ-অাত্মহুতি তা মাতৃভাষার জন্য বিশ্বের ইতিহাসে বিরল, যা কলক্রমে অাজ শহীদ দিবস হতে অান্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে স্বীকৃত।

দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগের পর পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশকে নব্য উপনিবেশে পরিনত করতে প্রথম অাঘাত অানে বাংলা ভাষার উপর তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রভাষা করতে চায় উর্দুকে যা তখনকার সময়ে উভয় পাকিস্তানের মোট জন্যসংখ্যার ১০ শতাংশেরও কম মানুষের ভাষা (পক্ষান্তরে ৫৬শতাংশ মানুষের ভাষা বাংলা)। ১৯৪৭সালে দেশ ভাগের পরই ১৯৪৮সাল থেকে এ সংগ্রাম শুরু হলেও তা চরম পর্যায়ে পৌঁছে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে, কালক্রমে তা ১৯৫৬সালে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষায় স্বীকৃত হয়ে ভাষা অান্দোলন স্তমিত হয়ে ভাষা অান্দোলন বাঙ্গালি জাতিসত্তার মাঝে যে দৃঢ় বন্ধন, বাঙ্গালি জাতিয়তাবাদ ও অধিকার সচেতনতা সৃষ্টি করে, পরবর্তীতে এ চেতনাই অামাদের সকল অান্দোলন সংগ্রামে বিজয়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


ভাষা অান্দোলনের মধ্যে বাঙ্গালি জাতিসত্তার মাঝে যে বাঙ্গালি জাতিয়তাবাদের দৃৃঢ় বন্ধনের সৃষ্টি হয় সেটা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙ্গালির অধিকার অাদায়ের অান্দোলনের পথে যাত্রা করে তাতে ৫৪ নির্বাচনে বিজয়, ৬২ শিক্ষা অান্দোলন, ৬৬সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের দেয়া বাঙ্গালির মুক্তির সনদ ছয়দফায় ঐক্যবদ্ধ গনরায়, ৬৯ এ গনঅভ্যুত্থান অার স্বাধীনতা অান্দোলনের বিজয়ে ভাষা অান্দোলনের তেজ অটুট অার স্পষ্ট।

ভাষা অান্দোলনের চেতনায় স্বাধীন বাংলাদেশে যে জাতিয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্রের সমন্বয়ে নতুন জন্ম নেওয়া স্বাধীন দেশের কাঠামো তৈরির পদক্ষেপের প্রথম পর্যায়ে জন্মশত্রু পাকিস্তানের বাংলাদেশি প্রেতাত্মায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হত্যায় সে অগ্রযাত্রা ব্যাহত হলেও দীর্ঘসময় পরে দেশে গনতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা, স্থিতিশীলতা, ধারাবাহিক রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে অার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মত যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সারাদেশে স্বাধীনতা অান্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দল বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগ বৃহত্তর ঐক্যর গনরায়ে বিজয়ী হয়ে দেশ পরিচালিত করছে এতে ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালি জাতিয়তাবাদের চেতনার সম্মিলন ঘটিয়ে উন্নয়ন অার সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রার পাশাপাশি মানবিক সমাজ গঠনে ভঙ্কুর এ বিশ্বে বাংলা/বাঙ্গালি/­বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে একুশের চেতনাই গুরুত্ববহ ভূমিকা পালন করবে।

যতদিন বাঙ্গালি জাতি থাকবে ততদিন ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির চেতনা দীপ্ত মাশালে পথ দেখবে বাঙ্গালির সংগ্রাম, সাফল্য, অগ্রযাত্রায়। ২০১৯ সালের এ ২১শে বসে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ভাষা অান্দোলনের সকল শহীদ সহ ভাষা সংগ্রামীদের।
জয় বাংলা।।


লেখকঃ মাঈনুল মান্নান,
বিএ(সম্মান)এম এ (বাংলা)।
গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ; চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ