ছাত্রীদের স্লোগানে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বিঘ্ন!

বিএন ডেস্কঃ
গভীর রাতে ছাত্রীদের স্লোগানে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবনযাপনে বিঘ্ন ঘটেছে বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হল প্রশাসনগুলো। এ জন্য হলের ছাত্রীদেরকে চিঠির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার কথা ভাবছে প্রশাসন। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র ঘটে যাওয়া ঘটনায় গত ৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তি এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ছাত্রী হলে যারা গভীর রাতে স্লোগান দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে বিঘ্ন ঘটিয়েছে তাদেরকে আবাসিক জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যত্নশীল থাকার জন্য পরামর্শ দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রাধ্যক্ষগণ চিঠি দিবেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা ও শিক্ষা-সহায়ক কর্মকাণ্ড ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বা হোস্টেলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও স্বাভাবিক জীবনে বিঘ্ন ঘটায় এমন কর্মসূচি (উস্কানিমূলক বক্তব্য, গুজব ছড়ানো প্রভৃতি) গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেয়া হবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার দিবাগত রাতে ঢাবির রোকেয়া ও শামসুন্নাহার, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হলের শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং গ্রেফতার কৃতদের মুক্তির দাবি জানান।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে অবস্থান ও ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। একই সঙ্গে বহিরাগতরা কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের অনুমতির প্রয়োজন হবে বলে ওইা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অছাত্র, বহিষ্কৃত ছাত্র, এমনকি অতিথিদেরও থাকতে দেয়া হবে না বলে জানানো হয়।
কমিটি সিদ্ধান্ত জানায়, ছাত্রত্ব নেই- এমন অছাত্রকে কর্তৃপক্ষ হলে অবস্থান করতে দেবে না এবং অনতিবিলম্বে অছাত্রদের (যদি থাকে) হল ছাড়ার নির্দেশ জানিয়ে নোটিশ দেবেন। এতে প্রয়োজনে হল কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেবে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, আবাসিক হল ও হোস্টেলগুলোতে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন, চরমপন্থী ও উগ্র ভাবাদর্শ প্রচারে ও কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত আছে কি না, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রশাসনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই নিষিদ্ধঘোষিত উগ্রপন্থী সংগঠনের সদস্য ও চরমপন্থীরা যাতে হলে প্রবেশ অথবা অবস্থান করতে না পারে, সে ব্যাপারে হল প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক ও তৎপর থাকতে হবে। এসব বিষয় নিয়ে সব হলে থাকা ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হল প্রশাসন নিয়মিত মতবিনিময় সভা করা হবে।
সভা থেকে জানা যায়, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনার তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ