উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতায় খানখানাবাদে জন চলাচল পথে দুর্ভোগ চরমে


বিগত বর্ষা মৌসুমের মহুরী বাড়ীর চলাচলের পথের ফাইল ফটো
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউপির পূর্ব রায়ছটা গ্রামের মহুরি বাড়ীর প্রায় ১০০ বছরের পুরানা একটি চলাচল পথ নিয়ে চলছে বগত ২ বছর যাবত ফজল কাদের, রশিদ আহম্মদ ও আলম নুরদের ৩ গ্রুপের রশি টানাটানি। এতে দুর্ভোগে শিকার উক্ত বাড়ির প্রায় ১০/১৫ পরিবারের সদস্যসহ মাদ্রসা পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঁশখালী নিউজে পরপর "সরকারি চলাচল পথে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ" এবং "খানখানাবাদে রশিদ ও ফজলের দ্বিমুখি টেলাটেলির চাপায় অতিষ্ঠ স্থানীয়রা" শিরোনামে ২টি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ও খানখানাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান বদরু উদ্দিনদ্বয় বাঁশখালী নিউজের ফেসবুক ফ্যান পেইজে কমেন্ট করে জানান, উক্ত বিষয়ে তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পরে উক্ত বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যানকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দেওয়া হলে, অভিযোগের প্রেক্ষীতে ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে এসেও কোন সুরহা করতে পারেন নাই। এব্যাপারে বাঁশখালী নিউজের পক্ষ থেকে বাঁশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ও খানখানাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান বদরু উদ্দিনদ্বয়ের সাথে মোবাইল ফোনে যোগযাযোগের চেষ্টা করা হলে, তারা উক্ত বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে লাইন কেটে দেয়। পরে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ না করে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।

  প্রসঙ্গত  বিগত ২ বছর পূর্ব থেকে উক্ত বাড়ীর চলাচলের পথটির ভাঙ্গন শুরু হয়। এই বিষয়ে বাড়ীর ভুক্তভোগীগণ বিগত প্রায় বছরখানেক পূর্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম'কে বাড়ীর চলাচলের পথটির ভাঙ্গনের বিষয়ে অবহিত করেন। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম উক্ত বাড়ীর চলাচলের পথ সংস্করণের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করেন। পথটির সংস্করণের বিষয়ে বাড়ীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা কালে বাড়ীর ২/৩ জন অসাধু ব্যক্তি সংস্করণের বিরোধীতাতামূলক বিভিন্ন আচরন করায় সংস্করণ করা সম্ভব হয় নাই। ইতিপূর্বে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদরু উদ্দিনও ঘটনাস্থলে গিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ফজল কাদের, রশিদ আহম্মদ ও আলম নুরদেরকে ২০০ টাকা করে সর্বমোট ৬০০ টাকা জমা দিয়ে জমি মাপার জন্য আমিন আনতে বলিলেও কেউ তার কথায় সাড়া দেয় নাই বলে জানা যায়।

রশিদ আহম্মদ টয়লেট নির্মান সহ সীমানা দেওয়াল ও বাড়ীর সিড়ি নির্মাণের ছবি
এইব্যাপারে ফজল কাদের বাঁশখালী নিউজকে জানান, চলাচল পথের সাথে লাগিয়ে আলম নুরের ভাই রশিদ আহম্মদ অবৈধভাবে টয়লেট নির্মান সহ সীমানা দেওয়াল ও বাড়ীর সিড়ি নির্মাণ করে একেবারের চলাচলের অনুপযোগি করে তুলে। ফজল কাদেরের দাবী, অবৈধভাবে টয়লেট স্থাপনা সহ সীমানা দেওয়াল ও বাড়ীর সিড়ি অপসারন করে চলাচল পথটি আগের মত নির্মাণ করার জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন। এছাড়াও তিনি আরো জানান, একটি চলাচল পথের সাথে লাগানো টয়লেট থাকলে কখনো চলাচল করা সম্ভব না।

এব্যাপারে আলম নুর ও রশিদ আহম্মদ বাঁশখালী নিউজকে জানান, তারা তাদের নিজস্ব সম্পত্তির উপর টয়লেট নির্মান সহ সীমানা দেওয়াল ও বাড়ীর সিড়ি নির্মাণ করেন। তারা চলাচলা পথ নির্মান করার জন্য প্রযোজনে পাশের পুকুরের পাড় বরাট করার জন্য প্রস্তুত আছেন। তারা টয়লেট সহ সীমানা দেওয়াল ও বাড়ীর সিড়ি অপসারন করবে না বলে জানান।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, উক্ত বাড়ীর চলাচলের পথ সংস্করণের বিরোধিতা করছেন একই বাড়ীর ফজল কাদের, রশিদ আহম্মদ ও আলম নুর। তাদের লক্ষ্য হল, ঐ বাড়ীর সাধারণ বাসিন্দারা কস্টের বিনিময়ে চলাফেরা করুক আর তারা শহরে বসে বসে তা দেখতে থাকবে। বাড়ীর ঐ তিন ব্যক্তি শহরে বসবাস করায় তাদের কিছু আসে আর যায় না বলে জানা যায়। এমনকি বাড়ীর ভুক্তভোগীরা সবায় মিলে কয়েকবার পথটি সংস্করণের চেষ্টা করলেও ঐ তিন পরিবারের বিরোধীতার কারণে সম্ভব হচ্ছে না। দিন দিন ভাঙ্গনের মাত্র বৃদ্ধি পেয়ে উক্ত বাড়ীর চলাচলের পথ সম্পূর্ণ বিলিন হয়ে পাশের একটি পুকুরের সাথে মিলে গেছে। বাড়ীর বাসিন্দারা সহ মাদ্রাসার অনেক ছাত্রছাত্রীদের ইতিপুর্বে বর্ষার মৌসুমের মত এক হাটু পানিতে হেটে কাদামাখা অবস্থায় চলাচল করতে হয়েছে। এমনকি বাড়ীর ভুক্তভোগীরা মিলে কয়েকবার পথটি সংস্করণের চেষ্টা করলেও ঐ দুইজন সহ তাদের পৃষ্টপোষকতাদের বিরোধীতার কারণে সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও রশিদ আহম্মদ উক্ত চলাচল পথটির উপর টয়লেট নির্মান সহ সীমানা দেওয়াল দিয়ে পরিবেশ নষ্ট করে একেবারের চলাচলের অনুপযোগি করে তুলে বলে জানা যায়।

  বাড়ির ভুক্তভোগি বাসিন্দারা সহ মাদ্রাসার কিছু ছাত্রছাত্রীরা বাঁশখালী নিউজকে জানান, বাড়ির বাসিন্দারা অনেকে কস্টের বিনীময়ে চলাচল করছে। তাদের কোন মেহামান আসলে মানসম্মান ক্ষুন্ন হয় বলে জানায়। মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের জন্য উক্ত চলাচল পথ ছিল কাছের এবং নিরাপদ। উক্ত পথ সংস্করণ না হওয়ায় বর্ষা মৌসমে ছাত্রছাত্রীদের অনেক দূর দিয়ে মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করতে হয়, এতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হয় বলে জানায়। ঐ বাড়ির ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের একটায় আর্তনাত, "আমরা কি আগের মত মানসম্মান নিয়ে সুন্দরভাবে চলাচল করতে পারব না?"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ