‘যদি আমাকে অবহেলা করিস, আমি আর ফিরবো না’ এই বলে ফোন কেটে দেয়

বি,এন ডেক্স:
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি- আঁখি ও মিনহাজ। মাত্র এক সপ্তাহ আগে এক সুতায় জীবন বেঁধেছিলেন। হিমালয়কন্যা নেপালে যাচ্ছিলেন মধুচন্দ্রিমায়। তাঁদের ভালোবাসার জীবনের সমাপ্তি ঘটল ইউএস-বাংলার দুর্ঘটনায়।
পরিবারের সদস্যরা জানায়, আঁখি মনি ওরফে ফারিয়া জেসি ও মিনহাজ বিন নাসিরের বাসা রাজধানীর মহাখালীতে। আখির বাবা রফিকুল ইসলাম কখনো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে কখনো ঢাকার রামপুরায়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁদের গায়ে হলুদ আর ৩ মার্চ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ছিল। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আঁখির মেহেদী রাঙ্গানো নিথর হাত ও হাতের অনামিকায় হিরের দুটি আংটির ছবিটি রীতিমতো ভাইরাল।
নেপাল বিমান দূর্ঘটনায় নিহত আখির লাশের অপেক্ষায় রয়েছে রামপুরার বাসায় তাদের সব আত্বীয় স্বজন। চলছে শোকের মাতম। আঁখি ও সাকিব দুই পিঠা পিঠি ভাইবোন। সাকিব, আখির চেয়ে ২ বছরের ছোট।
সাকিব আজ জানায়, আব্বু (রফিকুল ইসলাম পেশকার মিয়া) নেপালে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দিবে। লাশ না-কি পুড়ে গেছে। আপুকে আব্বু চিনতে পেরেছে বিয়ের আংটি ও হাতে মেহেদী দেখে। মৃর্তূর পরও আপুর হাতের আঙ্গুলে দুটি ডায়মন্ডের আংটি চকচক করছিলো বলে জানতে পেরেছি।
আখি আপু এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে পড়তো। আমরা দু ভাইবোন বন্ধুর মতো মিশতাম। ১২ তারিখ এয়ারপোর্ট থেকেও আপু আমাকে ফোন করে বলেছে, আমার বিয়ে হয়ে গেছে বলে তোরা কেউ যদি আমাকে অবহেলা করিস, তবে আমি আর ফিরবো না’-এই বলে ফোন কেটে দেয়।
আখিদের দেশের বাড়ি বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রুপসদী গ্রামের দক্ষিন পাড়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিবেশী মো.তুহিনুল ইসলাম তুহিন বলেন,-‘‘আঁখি আপাদের বাবা রফিকুল ইসলাম পেশকার মিয়া একজন ক্যামিকেল ব্যবসায়ী। আগে সিএন্ডএফ ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। দেশ আসতেন মাঝে মধ্যে।
তখন বলতেন,-‘আমার মেয়েকে একদিন সারা দেশের মানুষ তাকে চিনবে, জানবে। তোরা টিভিতে তাকে দেখতে পাবি’ কিন্তু সে দেখা যে এমন বিভৎস মৃর্ত্যূ দিয়ে হবে তা বুঝিনি। এ বেদনার ভার অসহনীয়।’’
আঁখির চাচাতো ভাই জাহিদ হোসেন এই নবদম্পতির বিয়ের অনেক ছবি ফেসবুকে দিয়ে লেখেন, ‘কোনো দিন ভাবতে পারিনি এইভাবে চলে যাবে। তোমাদের আর হানিমুন করা হলো না আপু। ৭ দিন আগে বিয়ে হলো আর আজ তোমরা নেই। তোমাদের মৃর্ত্যূ আল্লাহ জান্নাতে কবুল করুক।’


সংগৃহীত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ