২০৯ কোটি টাকার প্রকল্প দাঁড়াচ্ছে ৩০০ কোটিতে

নদীর গতিপথ পরিবর্তন ভূমি স্তর কমে যাওয়ার কারণে আরেক দফায় ব্যয় বাড়ছে বাঁশখালী বেড়িবাঁধ প্রকল্পের। এতে ২০৯ কোটি টাকার প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত ৩০০ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে। পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী ধীমান চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাঙ্গু নদীর মোহনায় নদীর গতিপথ বদলে গেছে। সমতল ভূমির স্তর নিচে গেছে। এই অংশে বাঁধ নির্মাণ ব্লক বসানোর কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য নকশায় পরিবর্তন এনে বাঁধ উঁচু করার জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বাঁধ উঁচু করা না হলে বাঁধ উপচে পানি ভেতরে ঢুকে যাবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য বাঁধ আরও উঁচু করা ডাম্পিং ব্লক বাড়ানোর প্রস্তাবনা করে নতুন ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি এখনো অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। এদিকে, চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ। কিন্তু কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩৩ শতাংশ। কাজের শ্লথগতির কারণে কাজ এগোচ্ছে না। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন এক বছর বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। পাউবো সূত্র জানায়, ২০১১১২ সালের প্রকল্পের জরিপ করা হয়। ২০১৩ সালে বাঁধের নকশা চূড়ান্ত হয়। তখনকার রিডিউস লেভেল ধরে (পানির চেয়ে সমতল ভূমি) নকশা প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ
করা হয়। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৯ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির কারণে ঠিকাদারের আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছিল। প্রকল্পের ব্যয় ২০৯ কোটি থেকে বেড়ে ২৫১ কোটি ২৯ লাখ ৮৬ হাজার টাকায় দাঁড়ায়। প্রথম দফায় বেড়েছিল সাড়ে ৪২ কোটি টাকা। কাজের মাঝপথে এসে আরেক দফায় ব্যয় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, ২০১২ সালে জরিপ করা হয়েছিল। ওই সময়ের পানির লেভেলের (রিডিউস লেভেল) চেয়ে বর্তমান পানির স্তর বেড়ে গেছে। অর্থাৎ ভূমির স্তর নিচে নেমে গেছে। এতে বাঁধ রক্ষা করা যাচ্ছে না। আগের নকশা অনুযায়ী কাজ করা হলে বাঁধ উপচে পানি ভেতরে ঢুকে যাবে। তিনি আরও বলেন, আগে রিডিউস লেভেল ছিল দুই দশমিক আট। বর্তমানে তা নেমে এক দশমিক ৩০ এক দশমিক পাঁচ নেমে এসেছে। এই কারণে খানখানাবাদের প্রেমাশিয়া মৌলভী পাড়া অংশে নকশায় কিছুটা পরিবর্তন করা হচ্ছে। এতে ব্যয় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ব্যয় বাড়তে পারে। পাউবো জানায়, ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৬১৭ অর্থবছরে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। চলতি অর্থ বছরে (২০১৭১৮ সাল) ১২০ কোটি টাকার ছাড়ের অনুমোদন করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে বৈরি আবহাওয়ার কারণে কাজের গতি শ্লথ হয়ে পড়েছে। পর্যন্ত ৩৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কদমরসুল প্রেমাশিয়া অংশে বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। খানখানাবাদ অংশে বাঁধে মাটির কাজ চলছে। বাহারছড়ায় ব্লক বসানো হলেও তা জোয়ারের পানিতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুকুরিয়া অংশে শঙ্খ নদীর ভাঙন এলাকায় ব্লক বানানোর কাজ চলছে। সাধনপুরে মাটির কাজ শেষে ব্লক বসানো হচ্ছে। ামারায় মাটির কাজ শেষে ব্লক বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। কাজের মান নিয়ে আগ থেকে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ ছিল, নি¤œমানের পাথর বালু ব্যবহার করে ব্লক বানানো হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার তারেক বলেন, কাজের মান নিয়ে ট্রাস্কফোর্স কমিটি বুয়েটে একাধিকবার পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়েছে। কিছু ব্লক বাতিলও করা হয়েছে। অনিয়মের প্রমাণ পেলে ট্রাস্কফোর্স ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ