চাকুরির প্রলোভনে বাঁশখালী থেকে অপহরণ

বাঁশখালীর কালীপুর ইউনিয়নের ৪র্থ শ্রেণি ৫ম শ্রেণিতে পড়য়া দুই ছাত্রীকে অপহরণকারী চক্র চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে নভেম্বর পালেগ্রাম প্রধান সড়ক হতে অপহরণ করে। অপহরণকারী চক্রটি দুই ছাত্রীকে প্রথমে আনোয়ারার মিয়ার হাট পরে নগরীর বহদ্দারহাটে মোট ১৭ দিন আটকে রাখে। স্বজনরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার রাতে নগরীর বহদ্দারহাট থেকে তাদের উদ্ধার করে। শিক্ষার্থী দুজনের পক্ষে অভিভাবকদ্বয় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা যায়, কালীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জালাল আহমদের কন্যা পিইসি পরীক্ষার্থী নাহিদা বেগম (১১) তার প্রতিবেশী কালীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়য়া মৃত মোহাম্মদ মহিউদ্দীনের কন্যা আঁখি আকতার (১০) লেখাপড়া করে আসছিল। বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবেশী পালেগ্রামের বাসিন্দা কমরুনাহার সঙ্গীরা গত নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে হাকিমিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে শিক্ষার্থী দুজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণকারী চক্রটি সংঘবদ্ধ হয়ে ১ম দফায় আনোয়ারা মিয়ার হাট এলাকায় ৫ম তলার একটি ভবনে তাদের আটকে রাখে। পরবর্তীতে নগরীর বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার সংলগ্ন ৫ম তলার অপর একটি ভবনের ৪র্থ তলায় আরো পাঁচজন মেয়ের সাথে শিক্ষার্থী দুজনকে আটকে রাখে। কালীপুর ইউনিয়নের পালেগ্রাম হতে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় কালীপুরের জেসমিন আক্তার নামের এক মহিলার চলাচরিত্র নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহল রয়েছে। শিশু কিশোরীদের চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে শহরে নিয়ে দেহব্যবসায় জড়িত দালালদের কাছে মোট অংকের টাকা নিয়ে বিক্রি করে দেয়। এই শিক্ষার্থীদের অপহরণেও প্রতারক চক্রটির সদস্য কমরুনাহার জড়িত সন্দেহে গত রবিবার আটক করা হয়। অপহৃত শিক্ষার্থী নাহিদা বেগম আঁখি আক্তার নগরীর বহদ্দারহাটে একটি বাসায় রয়েছে বলে কমরুনাহার নিশ্চিত করে
উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থী আঁখি আক্তার নাহিদা বেগম বলে, ‘প্রতিবেশী জেসমিন আক্তার, জোহরা খাতুন কমরুনাহার চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল মাদ্রাসায় আসার পথ হতে শহরে নিয়ে আসে। একবার খাইতে দিত, একবার দিত না। একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখা হত। আমাদের সাথে আরও জন মহিলা ছিল। কিছু মাদকসেবী যুবক দিনরাত আসত। বড় করে কথা বলতে দিত না। বাড়ি যাব বললেই মারধর করা হত। মোবাইলে টাকা দিয়ে বিক্রির কথা শুনেছি। গতকাল মঙ্গলবার আমাদেরকে (দুই শিক্ষার্থীকে) চক্রটি অন্য স্থানে সরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। আমরা যে এই চক্র থেকে উদ্ধার হতে পারব চিন্তাই করি নাই।
কালীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান .. শাহাদত আলম বলেন, ‘পালেগ্রাম থেকে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছিল। তবে স্থানীয় জন মহিলা প্রতারণা করে শিক্ষার্থীদের বিক্রি করবে বা খারাপ কাজে জড়িত করাবে ধারনার বাইরে ছিল। নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীদের স্বজনদের তৎপরতা এবং কমরুনাহার জেসমিন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তার দেয়া তথ্য অনুসারে জোহরা খাতুন জড়িতদের নাম প্রকাশ হয়ে পড়ে। ১৭ দিন পর বহদ্দারহাট এক বাসা থেকে শিক্ষার্থী দুই জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী দুজনকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় এসেছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ওই পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে অবহিত করেননি। পুরো ঘটনা জানার পর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে
সুত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ