বাঁশখালীতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক ক্লিনিক ও ল্যাব, নেই কোন বৈধ কাগজপত্র

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় ৫১ শয্যার সরকারি হাসপাতাল থাকলেও গড়ে উঠেছে নামে-বেনামে অর্ধশতাধিক ক্লিনিক ও ল্যাব। এসব ক্লিনিক ও ল্যাবে নেই কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র।  কর্মরত কারো কাছে নেই যোগ্যতা সনদ।

এসব ক্লিনিক ও ল্যাব তদারকিতে জেলা সিভিল সার্জনের পক্ষে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুর রহমান মজুমদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়,তিনি ঐ সব ক্লিনিক ও ল্যাব পরিদর্শন করতে গেলে কোন প্রয়োজনীয়  কাগজপত্র পাওয়া না যাওয়ায় সেই সব ক্লিনিক ও ল্যাবকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখাতে সর্বশেষ ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হলেও ১৮ আগস্ট (মঙ্গলবার) পর্যন্ত কেউ কাগজপত্র জমা দেননি বলে জানান ডা. শফিকুর রহমান মজুমদার।

সারা দেশে ব্যায়াপি ক্লিনিক ও ল্যাবের সরকারিভাবে কাগজপত্র যাচাই করার অংশ হিসাবে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বী গত ১৮ জুলাই বাঁশখালী হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং ডাক্তারদের এ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেন।

তার এ ধারাবাহিকতা হিসাবে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুর রহমান মজুমদার ২০ জুলাই উপজেলা সদরে অবস্থিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাব পরিদর্শন করেন।

এরপর ২৩ জুলাই উপজেলার উত্তর অংশে অবস্থিত কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ল্যাব পরিদর্শন করা হলেও পরবর্তীতে তা অদৃশ্য কারণে থমকে যায়। তবে তিনি হাসপাতালের জরুরি কাজের জন্য সময় দিতে না পারায় পরিদর্শন করতে না পারলেও কাগজপত্র জমাদানের সীমা ধরে দিয়েছেন এবং পরিদর্শনকালে কারো কাগজপত্র সঠিক পাওয়া যায়নি বলে জানান।

বাঁশখালীর উত্তরের পুকুরিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণের পুঁইছড়ি প্রেম বাজার পর্যন্ত নতুন-পুরানো মিলিয়ে রয়েছে ৭/৮টি বেসরকারি হাসপাতাল আর ২০/৩০টি ক্লিনিক, ডেন্টাল ক্লিনিক, থেরাপি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এসবে রকমারি ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথা বলা হলেও কোনো ল্যাবেই স্বীকৃত কোনো টেকনিশিয়ান নেই বলে জানা যায়।

কোথাও দুয়েক বছর কাজ করে তারা অভিজ্ঞতার সনদে চালিয়ে নিচ্ছে কার্যক্রম।

বিগত দিনে বাঁশখালীর বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর অপমৃত্যু, একেক ল্যাবে একেক ধরনের রিপোর্ট দেওয়ার কারণে রোগীর পক্ষে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হলেও কোনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ পায়নি।

ফলে চিকিৎসা সেবার প্রতি মানুষের চরম প্রতারণার অভিযোগ থাকলেও নিরুপায় হয়ে বার বার চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ জনগণ। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারগণ এ সব বেসরকারি ক্লিনিক, ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগীও দেখছেন।

পুকুরিয়া চৌমুহনী, গুনাগরি, টাইম বাজার,চাম্বল বাজার, নাপোড়া ও পুইঁছুড়ি প্রেমবাজার সহ উপজেলার অলিগলিতে নামিদামি ডাক্তারদের নাম সম্বলিত চোখ ধাঁধানো ব্যানারসহ ডিজিটাল সাইনবোর্ড লাগিয়ে চালু আছে বেশ কিছু ডেন্টাল ক্লিনিক, থেরাপি কেন্দ্র ও প্যাথলজিক্যাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারও।

এসব ব্যানারে লেখা আছে কম্পিউটারাইজড, পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ও অত্যাধুনিক সহ ইত্যাদি নানা দৃষ্টি আকর্ষক কথা।

বর্তমানে দেশে করোনা রোগকে পুঁজি করে একদিকে ঔষধের দাম বৃদ্ধি অপরদিকে অপচিকিৎসার কবলে পড়ে সাধারণ রোগীদের নানাভাবে হয়রানির ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ও হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ