নাগ-নাগিনী পাহাড়ে মানুষের বিষাক্ত থাবা

নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার চন্দ্রনগর এলাকায় একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে বিশাল পাহাড়টি কাটছে। পাহাড় কাটার দায়ে এক ব্যক্তিকে গতকাল বুধবার ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, চন্দ্রনগর বাজারের উত্তর পাশের পাহাড়টির নাম ‘নাগ-নাগিনী পাহাড়’। বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড় কাটা চলছিল। প্রায় প্রতিদিন রাত গভীর হলে পাহাড় কাটা শুরু হয়। স্কেভেটর দিয়ে কাটা মাটি ট্রাকে করে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাহাড়ের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের বিশাল এলাকা ইতোমধ্যে পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোহাম্মদ বাহার উদ্দীন প্রকাশ কালা বাহার নামে এক ব্যক্তি পাহাড়ের মাটি কাটছে। কালা বাহার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে নিজের পরিচয় দেন। নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলেও প্রচার করেন।
এই ব্যাপারে কথা বলতে কালা বাহারের মোবাইলে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে, পাহাড় কাটার কথা জানতে পেরে পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালায়। ওই সময় স্থানীয় কাঠালবাগান বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি জেড এ আবাসিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলমকে নোটিশ প্রদান করা হয়। শুনানি শেষে গতকাল তাকে পাহাড় কাটার দায়ে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক গতকাল এই জরিমানার রায় প্রদান করেন।
পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, রাস্তা সমপ্রসারণের জন্য পরিবেশ অধিদফতর থেকে অনুমতি নিয়েছিল বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার কাঠালবাগান বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি জেড এ আবাসিক সমিতি। পরে মোহাম্মদ বাহার উদ্দিন প্রকাশ কালা বাহার পাহাড় কাটেন। কিন্তু বাহার উদ্দিন পাহাড় কাটলেও এর প্রতিবাদ করেনি জেড এ আবাসিক সমিতি। জেড এ আবাসিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, রাস্তা সমপ্রসারণের জন্য অনুমতি নিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু আমরা পাহাড় কাটিনি। তবে এখন জরিমানা দিতে হচ্ছে আমাদের।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, এ পাহাড়ের সঙ্গে কাগজপত্রে যাদের সংশ্লিষ্টতা আছে তাদের জরিমানা করা হয়েছে। কে কেটেছে সেটা তো আমরা দেখিনি। পাহাড় কেটেছে তা দেখতে পেয়েছি।
পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুনানি শেষে পাহাড় কাটার ঘটনায় খোরশেদ আলমকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক। কিন্তু পরে খোরশেদ আলমের অনুরোধে জরিমানার পরিমাণ ৪০ হাজার টাকা করা হয়।
প্রসঙ্গত, একই পাহাড়ের অংশ বিশেষ কাটার অপরাধে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ বাহার উদ্দিনসহ দুজনের নামে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় তাদের দুজনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ৮ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছিল। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
/আজাদী! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ