ডিমলায় আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি সুমির কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ

মোঃ সাদিকউর রহমান (স্কলার)ঃ
নীলফামারীর ডিমলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সরকার ফারাহানা আক্তার সুমির কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকের ওই ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ সময় সাত ব্যক্তি আহত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার কে দায়ি করছেন সুমি। মনোনয়ন প্রত্যাশী সুমির সমর্থকদের অভিযোগ, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই কার্যালয়ে কয়েকজন সমর্থক বসে কথা বার্তা বলছিলেন। এ সময় নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকারের কিছু সমর্থক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাব পত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে। হামলায় সাত জন আহত হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা যুব লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম (৩৮)  বালাপাড়া ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. ফিরোজ আহমেদ কে (২৮) ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ডিমলা ইসলামিয়া কলেজ শাখা ছাত্র লীগের সহ সভাপতি আব্দুল গফুরকে (২২) ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সুমির কার্যালয়ের সামনে হঠাৎ লোকজনের জটলা দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার ও সুমির পক্ষের লোক জনের মধ্যে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে ওই কার্যালয়টি ভাঙচুর হতে দেখা গেছে। সৃষ্ট ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (কল্যাণ ও পূর্ণবাসন) নীলফামারী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশি সরকার ফারাহানা আক্তার সুমি। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশায় জননেত্রী শেখ হাসিনা যে ভাবে কাজ করতে বলেছেন সে ভাবে কাজ করছি আমি। কিন্তু নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার ভাই, ভাতিজা এবং সমর্থক দিয়ে বার বার আমার প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি  করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কোন ঘটনা ছাড়াই তারা ডিমলা শহরে আমার কার্যালয় ভাঙচুর করে। সেখানে অবস্থানরত আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এ সময় একাধিক মোটর সাইকেল ও ভাঙচুর করেছেন তারা, এ কাজে পুলিশ ও ব্যবহার হয়েছে। কারণ পুলিশ সেখান থেকে আমার সমর্থকদের সরিয়ে দিয়ে কার্যালয়টি ভাঙচুরের সুযোগ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য এবং তার সমর্থকদের এমন কার্যকলাপে সাধারণ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের ভাব মূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ভাঙচুর করেছেন। আমার সাথে এম.পি র গ্রুপিং থাকতে পারে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙার এখতিয়ার তাঁরা রাখেন না। এ বিষয়ে সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার সাংবাদিকদের মুঠোফোনে বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশি সরকার ফারহানা আক্তার সুমির কোনো কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। যে কার্যালয় ভাঙচুর হয়েছে সেটি ছাত্র লীগের কোনো কার্যালয় নয়, অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীরা সেখানে বসেন। সরকার ফারহানা আক্তার সুমি সেখানে সওয়ার হয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নে এক কর্মী সভায় ছিলাম। পরে বিষয়টি জানতে পেরেছি। মনোনয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, মনোনয়ন আমার পৈত্রিক সম্পত্তি না, আমি আওয়ামী লীগ করি, সরকার ফারহানা আক্তার সুমি মনোনয়ন পেলে আমার অসুবিধা কোথায় ? ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, ছাত্র লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে এক জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্ট গানের তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন স্বাধীন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ