বাঁশখালী হাসপাতালের এম্বুলেন্স বৃষ্টিতে ভেজে রোদে শুকায়


বিএন ডেস্কঃ বাঁশখালী উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের নিলামকৃত সরকারি এম্বুলেন্সটি বিক্রি কবে হবে? হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ঘাসের ওপর ২ বছর ধরে পড়ে থাকা সরকারি এম্বুলেন্সটি নং (চট্ট-মেট্রো-ছ-৭১-০০৭১) বৃষ্টিতে ভিজে আবার রোদে শুকায়। তবুও নিলামে ওঠা এম্বুন্সেটি বিক্রি হচ্ছে না। সরকারি বরাদ্দকৃত মাইক্রো এম্বুলেন্সটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। তবুও কর্তৃপক্ষের নজর নেই! পরিত্যক্ত অবস্থায় এম্বুলেন্সটি দেখে স্থানীয় এলাকাবাসী হাসপাতালে রোগীর সেবা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। অনেকে মন্তব্য করেন, সরকারি সম্পদের এই অবস্থা হলে তাহলে চিকিৎসা নিতে আসা ও ভর্তি হওয়া রোগীর কি অবস্থা হবে ?
জানা যায়, বর্তমান সরকার গতবার ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে নতুন এম্বুলেন্স দাবি করেন। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছাতে সরকার বাঁশখালী উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নতুন একটি এম্বুলেন্স প্রদান করেন। নতুন এম্বুলেন্স পাওয়ার পর চাকা ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার অজুহাতে ২০১০ সালে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত এম্বুলেন্সটি নং (চট্ট-মেট্রো-ছ-৭১-০০৭১) বর্তমানে অকেজো হয়ে পড়েছে। এম্বুলেন্স’র গ্যারেজ থাকা সত্ত্বেও সেখানে মেরামত না করে ফেলে রাখা হয়। পরে হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খারাপ হওয়া এম্বুলেন্সটি নিলামে তোলার অনুমতি নেন। অনুমতি পাওয়ার পর বাঁশখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিলামে বিক্রির কাগজ দিয়ে জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে রেখেছে। গাড়িটির রং, চেহারা ইতিমধ্যেই বিবর্ণ হয়ে গেছে। বাঁশখালী হাসপাতালে আসা রোগীর অভিভাবক বদিউল আলম, খোরশেদ আলম বলেন, হাসপাতারে রোগীর চিকিৎসা করার জন্য আসা রোগীরা পড়ে থাকা এম্বুলেন্সটি দেখে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন। রোগীর প্রয়োজনে বাঁশখালী হাসপাতালের একমাত্র এম্বুলেন্সটি পাওয়া যায় না। অথচ চাকা ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়া সুন্দর একটা সরকারি এম্বুলেন্স পরিত্যক্ত অবস্থায় নিলামে তোলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে এই এম্বুলেন্সটি মেরামত করে রোগীর সেবায় ব্যবহারোপযোগী করতে পারবে। প্রতিদিন বাহির থেকে ৩/৪টি এম্বুলেন্স ভাড়ায় বাঁশখালী হাসপাতালে পরিবহন করে থাকে। বর্তমানে বাঁশখালীতে যে সমস্ত ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে, তাতে দৈনিক ৫টি এম্বুলেন্স ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তারা জানান।
বাঁশখালী উপজেলার সিনিয়র শিক্ষক শহীদুল আলম বলেন, রোগী বহনকারী এম্বুলেন্সটি মেরামত না করে নষ্ট করে ফেলে রেখে নিলামে তোলা হয়েছে। অথচ ঘটনাবহুল বাঁশখালীতে অন্তত ৩টি এম্বুলেন্সের প্রয়োজন রয়েছে। এম্বুলেন্সটি সচল করা গেলে সরকারিভাবে রাজস্ব আদায় হতো, রোগীরাও সেবা পেত; স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হতো।
বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র এম্বুলেন্স চালক মো. আলমগীর বলেন, এম্বুলেন্সটি নষ্ট হওয়ার পর নতুন একটি এম্বুলেন্স পাওয়া গেছে। পুরাতন এম্বুলেন্সটি তাই বর্তমানে নিলামে বিক্রির জন্য তোলা হয়েছে।
উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র টি.এইস.ও (প.প. কর্মকর্তা) কমরুল আজাদ বলেন, বাঁশখালী হাসপাতালে এম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন নষ্ট থাকার ফলে নিলামে দেওয়া হয়েছে। এই এম্বুলেন্সটি বিক্রিও হচ্ছে না।
 /পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ