অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন

বি,এন ডেক্স:
উখিয়ার সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শুক্রবার বিকেলে বিজিবি ওবিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যই সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছেবলে জানিয়েছে মিয়ানমার। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে পতাকাবৈঠকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়। বৈঠকে সাত সদস্যের বিজিবিপ্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান। আর মিয়ানমারের বিজিপিরনেতৃত্ব দেন ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল সোজা লিং। বৈঠক শেষে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান এতথ্য জানান। এর আগে বিকেল সোয়া ৩টারদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে শূন্যরেখার মৈত্রী সেতুসংলগ্ন পয়েন্টে বাংলাদেশেরঅভ্যন্তরে বৈঠকে বসে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, বৈঠকে মিয়ানমারের কাছেসীমান্তে সৈন্য সমাবেশ, গুলি বর্ষণের ঘটনার ব্যাখা চাওয়া হয়। এ সময় তারা গুলি বর্ষণের ঘটনাটি অস্বীকার করে।আর সৈন্য সমাবেশের বিষয়টি নিয়মিত টহল বলে জানায়। এ সময় ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করা ৫হাজার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেয় মিয়ানমার। বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তে বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থা বজায়রাখাসহ চোরাচালান বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয় বলেও জানান বিজিবি অধিনায়ক মঞ্জুরুল হাসান খান।
গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। এ সময় তাদের পক্ষথেকে বিজিপিকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। পরে বিকেলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেমিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তার কাছে এর কারণ জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে এমন আচরণ দ্বিপক্ষীয়সম্পর্কের জন্য ভালো নয় বলেও তাকে সতর্ক করা হয়। এদিকে, তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পেরবিপরীতে কাছাকাছি এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে বিজিপি ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। তবেএতে কেউ হতাহত হননি। এর পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ছাড়া সীমান্তেরশূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ, থেমে থেমে ইট–পাটকেল এবং পাথর নিক্ষেপ অব্যাহতরয়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ঢাকার সঙ্গে আলোচনারমধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে সীমান্তে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অবস্থান জোরদার করেছে। তারা নো ম্যানসল্যান্ড বাজিরো পয়েন্টে থাকা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত যেতে বাধা দিচ্ছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনেসেনাবাহিনীর নির্যাতন–সহিংসতার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয়নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সাহায্য আহ্বানসহ দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেবাংলাদেশ সরকার।
সূত্রঃ দৈনিক পূর্বকোণ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ