বাঁশখালীতে ঘাটের টোলের নাম ভাঙিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি'র অভিযোগ

জোবাইর চৌধুরী, বিশেষ সংবাদদাতাঃ
বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের খাটখালী মোহনায় ঘাটের টোলের নাম ভাঙিয়ে মালবাহী ট্রলার ও ফিশিং বোটে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিদিন শত শত পাথর ও বালুবাহী ট্রলার এই ঘাটে মালামাল সরবরাহ করে থাকে। সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতি ট্রলার হতে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। ইজারার নাম দিয়ে বেপোরোয়া টোল আদায় করছেন স্থানীয় একাধিক মামলার পলাতক আসামি জামাল উদ্দীন ভুট্টা নামে এক বিএনপি ক্যাডার। তাছাড়া জোর পূর্বক টোল আদায়কারীর মদদে রয়েছে বিএনপি সমর্থিত একটি বিশাল সিন্ডিকেট ও স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি। অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা এস. আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ কাজের জন্য সরবরাহকৃত পাথর ও বালুবাহী ট্রলার গুলো হতে মাল উঠা নামার জন্য জোর পূর্বক ২ হাজার টাকা করে আদায় করে নিচ্ছে ট্রলারের সোকানিদের কাছ থেকে। ট্রলার শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছে তাদেরকে মারধর ও লাঞ্ছিতের শিকার হতে হয় এই সিন্ডিকেটের হাতে। এদিকে বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক খাটখালী ঘাটে মালবাহী ট্রলার হতে নির্ধারিত ফি আদায়ের জন্য একটি সংঘটন নিয়োগ করা হয়েছে। তবে সংঘটনের পক্ষ থেকে টাকা তুলতে গেলে তাদেরকেও বিএনপি সমর্থিত এই সিন্ডিকেট বাঁধা দিচ্ছে। সোমবার দুপুরে গন্ডামারার খাটখালী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ইজারা ও অনুমোদন বিহীন একটি সিন্ডিকেট মালবাহী ট্রলার হতে জোর পূর্বক টাকা আদায়ের চিত্র। জোর পূর্বক চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ট্রলার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যেকোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গন্ডামারা ইউপি’র খাটখালী ঘাটে সরকারি ভাবে কোন প্রকার ইজারা প্রদান করা হয়নি। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা লেয়াকত আলীর নিকট হতে জামাল উদ্দিন ভুট্টো ও আনোয়ারুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপারের জন্য জনপ্রতি ৫ টাকা হারে টোলের অনুমোদন নেয়। সেই মানুষ পারাপারের অনুমোদনটি হাতে নিয়ে মালবাহী ট্রলার গুলো হতে জোর পূর্বক ২ হাজার টাকা করে ঘাটের ইজারার নাম দিয়ে চাঁদা আদায় করছে এই সিন্ডিকেট। 

এমবি দি মামা ভাগিনা, এমবি মোকারম ও এমবি ছদর আলী ব্যাপারী ট্রলারের সোকানিরা জনকণ্ঠের এই প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন, খেয়া পারাপারের মাঝি আনোয়ার হোসেন তাদের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা করে জোর পূর্বক আদায় করছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর ও লাঞ্ছিতের শিকার হতে হয় তাদের। এ ঘটনা হতে পরিত্রাণ পেতে আমরা ট্রলার মালিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আনোয়ার বাদশার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘সরকারি ভাবে খাটখালী ঘাটের কোন ইজারা নেয়ার নিয়ম নেই। তবে ইউনিয়ন পরিষদ হতে খেয়া পারাপারের জন্য একটি ঘাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ মালবাহী ট্রলার হতে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে কেন নিচ্ছে তা আমি তদন্ত পূর্বক বলতে পারবো।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়নের বাঁশখালী শাখার সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ট্রলার ইউনিয়ন কর্তৃক খাটখালী ঘাটে মালবাহী ট্রলার হতে নির্ধারিত ফি নেয়ার জন্য আমাদের সংঘটনের অনুমতি রয়েছে। আমরা সেই মোতাবেক ফি নিতে গেলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি দিচ্ছে স্থানীয় জামাল উদ্দিন ভুট্টো ও তার দলের লোকজন। তারা আমাদের সংঘটনের মালবাহী ট্রলার হতে ২ হাজার টাকা করে অনৈতিক ভাবে চাঁদা নিচ্ছেন।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ