ভাবির ওপর প্রতিশোধ নিতে ভাতিজিকে হত্যা!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাবি খাদিজা আক্তারকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন দেবর হেলাল মিয়া। কিন্তু ভাবি রাজি না হওয়ায় হেলাল প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী আড়াই বছর বয়সী ভাতিজি হালিমা আক্তারকে একবার পানিতে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। তবে এর কয়েক দিন পর গত শনিবার শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন হেলাল।

গত শনিবার জেলার শহরের ভাদুঘরে নিখোঁজের পাঁচ ঘণ্টা পর বাড়ি থেকে একটু দূরে দুটি বহুতল ভবনের মাঝখানের সরু জায়গা থেকে শিশু হালিমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হালিমার বাবা আমির হোসেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আলমগীর হোসেন এসব তথ্য জানান।
খাদিজা বেগম এ ঘটনায় বাদী হয়ে সদর থানায় দুজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় হেলাল মিয়া (২৬) ও রাত ১২টার দিকে ভাদুঘর এলাকা থেকে তাঁর সহযোগী রুবেল মিয়াকে (২২) গ্রেপ্তার করে। রুবেল একই গ্রামের ভূইয়াপাড়া মহল্লার ছেলে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন শনিবার সকালে হালিমাকে একটি চিপসের প্যাকেট দিয়ে কোলে করে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০গজ দূরত্বে একই গ্রামের ভূঁইয়াপাড়া মহল্লায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে দুটি বহুতল ভবনের মাঝখানের সরু জায়গার লাশ রেখে দেয়। এ হত্যাকাণ্ডের সময় রাজমিস্ত্রি রুবেল পাহারা দিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে হেলাল। হেলাল পুলিশকে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে খাদিজা বেগমকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় এবং পারিবারিক কলহের জের ধরেই এক মাস আগেও হেলাল ভাতিজি হালিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এমনকি ঘটনার ১২/১৫দিন আগে বাড়ির পেছনে একটি পুকুরে ডুবিয়ে হালিমা হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় হেলাল। ৪/৫দিন আগে হেলাল এলাকার রাজমিস্ত্রি রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে হালিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ভাদুঘরের ভূঁইয়াপাড়া মহল্লার নির্জন জায়গা নির্ধারণ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, এক মাস আগে গৃহস্থালির কাজ নিয়ে হেলাল ও তার মা-বাবার সঙ্গে খাদিজা বেগমের ঝগড়া হয়। তখন থেকেই হালিমাকে হত্যার করে তার মায়ের ওপর প্রতিশোধের পরিকল্পনা করে আসছিল হেলাল।
সংবাদ সম্মেলনের সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল কবির, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম উদ্দিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।
/প্রথম আলো!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ