বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগান এলাকায় শিবলিঙ্গের মুর্তি দেখিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে প্রতারনা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে

মোহাম্মদ এরশাদঃ বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগান এলাকায় শিবলিঙ্গের মুর্তি দেখিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে প্রতারিত করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চা বাগান সবসময় আকর্ষনীয়, আমরা যারা চা বাগানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে যাই বাগানের চাকচিক্য পরিবেশ দেখে এতোতাই মুদ্ধ হই এর পিছনে অবাক করা শোষনের চিত্রটা কেউ খুঁজ করিনা। তথাকথিত সভ্য সমাজ হতে বঞ্চিত, অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত এই কর্মবীর মানুষগুলো এখানে (ভোর ৭ টা থেকে বিকাল ৫ টা) সারাদিন কাজ করে বেতন পায় মাত্র ২০০ টাকা। বাসস্থান সুযোগের নামে এখানে বসবাস করা হতভাগ্য মানুষগুলো আসলে বাগানের সার্বক্ষণিক পাহারাদার, বাগান কর্তৃপক্ষের হুকুমের গোলাম হয়েই বসবাস করে। এখানে তাদের অবাধে ছোলাই মদ তৈরী ও মাদক সেবনের অধিকার আছে-- এটা আসলে হতভাগ্য মানুষগুলোকে নেশার ভিতর রেখে কৌশলে নাম মাত্র মুল্যে শ্রম আদায়ের অমানবিক কৌশল। কারণ ওরা সচেতন, স্বাভাবিক হলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখবে তাই। এখানে একটি প্রাইমারী স্কুল আছে, যা শ্রমিকদের কাছে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত, শ্রমিকের সন্তানরা সামান্য শিক্ষার সুযোগ নিয়ে তারপর শুরু করে চা বাগানের শ্রমিকের কাজ। এরপর নেশার জগৎ, খাঁটুনির জীবন শুরু আর এভাবেই একদিন প্রতিটি কর্মবীর মানুষের জীবনের অবসান। চা শ্রমিকের দের কাছ থেকে জানতে পারলাম এখানে শ্রীমৎ অক্ষরানন্দ চৈতন্য মহারাজ (বাঁশখালী ঋষিধাম থেকে বিতাড়িত) নামে এক ভন্ড মহারাজের আগমন ঘঠেছে। অনেকদিন ঘুরাঘুরির পর শুক্রবার তার সাথে দেখা হল। প্রথম দর্শনেই ভেবেছিলাম সেই কুখ্যাত রাম রহিম শিং নয় তো? ছবি তোলার অনুরোধ করলে সে একপ্রকার বিরক্তই হয়ে গেল, হয়ত আমাকে দেখেই তার ভক্ত বলে মেনে নিতে পারেনি। যা হোক অন্য ভন্ডদের মত সেও চা শ্রমিকদের সেবার নামে তাবিজ, পানিপরা, ফুলপরা, বেলপাতা পরা ইত্যাদি দিয়ে প্রতারিত করে চলছে। বাগান শ্রমিকদের কাছ থেকে জানলাম, এই ভন্ডও নাকি শতভাগ সফলতার সহিত নিঃসন্তান রমনীকে সন্তান দিতে পারে। গ্রাম, শহরের কিছু নিঃসন্তান বড়লোকও অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে তার নিকট প্রায় যাওয়া আসা করে সন্তান লাভের আশায়। অথচ সাধারণ সচেতন মানুষ মাত্রই জানে সন্তান হওয়ার সহজ প্রক্রিয়াটা। এ সমস্ত মহিলাদের চিকিৎসা করার জন্য মন্দিরের সামনে একটা আলাদা ঘর নির্ধারিত আছে। চিকিৎসা কালীন সময় ঐ ঘরে নিঃসন্তান ঐ রমনী ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ করা নিষেধ। জানতে পারলাম পুকুরিয়া এলাকায়ও এইসব ভন্ডামী করার জন্য তার আরও একটা আস্তানা আছে। চা শ্রমিকের দের কাছ থেকে শুনলাম কয়েক বছর আগে থেকে একটা মন্দির নির্মান করার জন্য বেশ কয়েকটা পিলার ঢালাই করা হয়েছে। ওখানে খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে একটি শিবলিঙ্গ। মন্দির নির্মানের নামে ঐ শিবলিঙ্গের মুর্তি দেখিয়ে সাধারণ অসহায় মানুষ ও ভক্তগন থেকে প্রতারনা করে
টাকা আদায় করা তার নিত্য কাজ। চা বাগানের শ্রমিক দের কাছ থেকে জানাল, বছর দুয়েক আগে এখানে মহোৎসবের সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে প্রধান অতিথি করলে উনি মন্দির নির্মানের জন্য ২,৫০,০০০/- বরাদ্দ প্রদান করেন। পরবর্তীতে ঐ টাকার কোন কাজ না করে এই ভন্ড পুরো টাকাই আত্মসাৎ করেছে। চা বাগানের সহজ সরল মানুষগুলো এখনো জানেনা তাদের মন্দির কবে নির্মিত হবে।
সকল সনাতনি ভাইদের উচিৎ এ সমস্ত ভন্ড, প্রতারক গুরুজী হতে সাবধান হওয়া। কারণ এরা কোন ধর্মীয় অবতার তো নয়ই এমনকি ধার্মিক মানুষও নয়। এরা যা করে তা হলো ঠান্ডা মাথায় ধর্মকে পুঁজি করে অসহায় নির্বোধ মানুষকে ঠকিয়ে নিজেরা আরাম আয়েশে দিনযাপন করা।
সবাই চাঁদা দিয়ে এই মন্দির নির্মানের সহযোগীতা করে চলছে ইহকাল, পরকালে একটু সুখ শান্তির আশায়। আর তাই হয়ত বেঁড়া টিনের ঘরবাড়িতে শ্রমিকরা রোগে শোকে দিনযাপন করলেও এ ভন্ড মহারাজের কিছু যায় আসেনা, যেমনটা কিছু যায় আসেনা আলিশান জীবন যাপনে অভ্যস্ত চা বাগান মালিকদের। সংশ্লীষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই সব ভন্ড মহারাজদের হাত থেকে সহজ সরল  
চা- শ্রমিকদের প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা করার অাহবান জানাচ্ছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ