শুরু হলো রিং রোড় নির্মাণ কাজের মান ও সময়সীমা নিশ্চিত করুণ

মোহাম্মদ এরশাদঃ
দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি একনেকে পাশ হয়েছিল গত বছর। কিছুটা দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের যাতায়াত ব্যবস’ায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।

শাহ আমানত সেতুর পাশে চাক্তাই খাল থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের সড়কটি সমুদ্র সমতল থেকে ২৪ ফুট উঁচু হবে।
সড়কের নিচে পেভমেন্ট হবে ২৫০ ফুট চওড়া ও সড়কের উপরিভাগে পিচঢালাই ৮০ ফুট চওড়া। শুধু সড়ক নয়, জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিতে এই সড়কের ১২টি খালের মুখে বসবে টাইডাল রেগুরেটর, পাম্প হাউজ, জেনারেটর ও বিদ্যুতের সাবস্টেশন।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি একদিকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ অপরদিকে যাতায়াতের জন্য সড়কে হিসেবেও ব্যবহৃত হবে। চার লেনের এই সড়কের সাথে যুক্ত হবে খাজা রোড, কে বি আমান আলী রোড, মিঞাখান রোড। এর ফলে শহরের ভেতরের মানুষ খুব সহজে এই সড়কের মাধ্যমে কালুরঘাট ব্রিজ বা শাহ আমানত ব্রিজে যেতে পারবে। ইতিমধ্যে শাহ আমানত সেতু অংশে দেড় কিলোমিটার এলাকায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে।

এরমধ্যে নির্মাণাধীন আছে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সাগর পাড়ে আউটার রিং রোড।
এই দুটি রিং রোড নির্মাণ কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমূল উন্নতি ঘটবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই সম্ভাবনা মাথায় রেখে ১৯৬১ সালে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানে কালুরঘাট থেকে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে একটি রিং রোড করার প্রস্তাবনা ছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানেও এই সড়কটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। ২০ বছর মেয়াদি সেই প্ল্যানও শেষ হয়েছে ২০১৫ সালে। শেষ পর্যন্ত কাজটি শুরু হওয়ায় আমরা সাধুবাদ জানাই।
একটি আধুনিক নগরে যে পরিমাণ সড়ক থাকা দরকার তার অর্ধেকও নেই চট্টগ্রামে। ফলে শহরে উত্তর-দক্ষিণ অংশের যোগাযোগে বড় বিড়ম্বনা পোহাতে হয় নগরবাসীকে। এই সড়কটি নির্মিত হলে শহরের ভেতরে যানবাহনের চাপ অনেক কমবে এবং যাত্রীদের অনেক সময় সাশ্রয় হবে। তিন পার্বত্য জেলাসহ কক্সবাজারগামী সকল ধরণের যানবাহনকে চট্টগ্রাম নগরীর মধ্যদিয়ে চলাচল করতে হয় ফলে নগরীর অভ্যন্তরীণ চলাচল ক্ষেত্রে এটি অতিরিক্ত যানজট সৃষ্টি করে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল নগরকে মুক্ত রেখেই সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়। আমাদের দেশের উত্তরবঙ্গের মহাসড়কটিও মূল শহরকে বাইপাস করে নির্মিত হয়েছে। এই পদ্ধতি একটি শহরকে যানজট মুক্ত রাখার অন্যতম একটি কৌশল।

আমরা আশা করব ভবিষ্যতে অন্যান্য জেলায়ও যাতায়াতের জন্য বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হবে। তাতে চট্টগ্রাম নগরের ওপর অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ কমবে। আমরাও চাই সড়কটির নির্মাণকাজ দ্রুত ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ হোক। যেহেতু সড়কটি নদীর পাড়ে নির্মিত হচ্ছে সেহেতু তা নির্মাণে যেন গাফেলতি না হয় তার তদারকি বজায় রাখা হোক। কাজের মান বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট থাকুক।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ