সড়কের দু’পাশের ডাস্টবিন সরিয়ে নেয়ার ঘোষনা

মোহাম্মদ এরশাদঃ
চট্টগ্রাম নগরে প্রধান প্রধান সড়কের দু’পাশে স্তুপ ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিনগুলো সরিয়ে নেয়ার ঘোষনা দিলেন সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি নগরীর প্রধান সড়কে কয়েকটি স্পটে ময়লা স্তুপের কথা উল্লেখ করে বলেন, সড়কে যত্রতত্র ময়লা স্তুপ দৃষ্টি কটু ও পরিবেশের পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্য বিঘিœত করছে। আমাদের এই প্রিয় নগরকে ক্লিন ও গ্রিন সিটি গড়তে ইতোমধ্যে ১৩৫০টি ডাস্টবিনের মধ্যে ৬০০টি ডাস্টবিন অপসারণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ডাস্টবিন ৭৫০টি ডাস্টবিন আগামী ১ মাসের মধ্যে সড়ক থেকে সড়িয়ে নেয়ার নিমিত্তে বিকল্প জায়গা খুজে বের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র।  বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স হলে জাইকা সাহায্যপুষ্ট সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পের অধীনে গঠিত সিভিল সোসাইটি কো-অডিনেশন কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। সভায় চসিক প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেনসহ সিভিল সোসাইটি কো-অডিনেশন কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় আইইবি’র সহ সভাপতি এম এ রশিদ, অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চসিকের কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু ও মোরশেদ আকতার চৌধুরী আলোচ্যসূচির উপর তাদের মতামত তুলে ধরেন। মেয়র নগরীর সার্বিক উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে সিভিল সোসাইটি বিশেষজ্ঞ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সর্বস্তরের নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। মেয়র বলেন, তারকা হোটেল,রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে হলে ক্রেতাদেরকে ভ্যাট দিতে হয়। সেখানে খাবারের মূল্যের সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ সংযোজিত থাকে। হোটেল,রেস্টুরেন্টগুলোতে গিয়ে আমাদের অভিজাত সমাজকে সংযোজিত এই ভ্যাট প্রদান করতে হয়। সেক্ষেত্রে কোন ওজর-আপত্তি থাকে না। কিন্তু সিটি কর্পোরেশনকে গৃহকর প্রদান করার সময় হোল্ডারদের যত আপত্তি। সিটি কর্পোরেশন সরকার ধার্যকৃত গৃহকর আদায় করে থাকে। সরকার সিটিগুলোতে স্বতন্ত্র হারে গৃহকর ধার্য করেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ১৭ শতাংশ। কিন্তু ধার্যকৃত এই গৃহকর দিতে নগরবাসীর আপত্তি-আপিলের শেষ নেই। রাজধানী শহর ঢাকায় গত অর্থ বছরে গৃহকর আদায়ের হার প্রায় ৭০ শতাংশ। এখানে নানামুখী উদ্যোগ পরিকল্পনা গ্রহণের পরও গৃহকর আদায়ের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ। তিনি আরো বলেন, আইনি কাঠামো শতভাগ মেনে এ্যাসেসমেন্ট করা হলে চট্টগ্রামে গৃহকর বাবদ হাজার কোটি টাকা কর আদায় সম্ভব। কিন্তু নানামুখী সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করে চসিক সম্মানিত হোল্ডাররে কাছ থেকে গৃহকর আদায়ে গৃহকর মওকুপ,টোকেন গৃহকর প্রদানসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। তা স্বত্ত্বেও একশ্রেণির ব্যক্তি চসিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে নানামুখি অপতৎপরতায় লিপ্ত আছে। অপপ্রচারে নগরবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন চসিকের সেবা চলমান রাখতে হলে সময়মত তাদের গৃহকর প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। নচেৎ চসিকের বিশাল কর্মযজ্ঞে স্থবিরতা নেমে আসবে বলে সভায় তিনি উল্লেখ করেন। সভায় আইইবি’র সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. হারুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন চলমান উন্নয়ন প্রকল্প কাজ চলাকালিন সময়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয়দের উপস্থিতি বাঞ্চনীয়। এতে কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়। তিনি প্রকল্প কাজ চলাকালিন সময়ে সরেজমিনে উপস্থিতি থাকার জন্য মেয়রকে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন। বিএমএ’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মুজিবুল হক খাঁন ফ্লাইওভারের জন্য যে রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করার জন্য সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সাংবাদিক এম নাছিরুল হক বলেন ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় সময় রাতে বেলায় রাস্তা কর্তন করে। এতে করে যানচলাচলের সমস্যা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টিসহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এই দুর্ঘটনা এড়াতে তিনি রাস্তা কর্তনের সাথে সাথে মেরামতের উপর গুরুত্বারোপ করেন। চিটাগাং চেম্বারের পরিচালক অহিদ সিরাজ স্বপন নগরীর জাইকার অর্থায়নে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড ও পোর্ট কানেকটিং রোডের কথা উল্লেখ করে বলেন যত দ্রুত সময়ের মধ্যে এই দু’টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ