চোর চিনে ফেলায় খুন করা হয় গৃহকর্মী রাফিয়াকে


নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গৃহপরিচারিকা খুনের ঘটনায় বাড়ির কেয়ারটেকারসহ ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

রবিবার (১৫ অক্টোবর) রাতে নিহত গৃহপরিচারিকা রাফিয়া বেগমের মা হাজেরা বেগম বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন, ছনুয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের হাঁসপাড়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে দেলোয়ার হোসাইন ওরফে ফজু (৪৫), একই ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ছুরুতিয়া পাড়া এলাকার আবদু ছমদের ছেলে মিরাজ উদ্দিন (২২)। এছাড়াও ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছনুয়া কাদেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক প্রয়াত আরেফুল কাদের চৌধুরী প্রকাশ আফু মিয়ার বাড়িতে গৃহপরিচারিকা হিসেবে থাকতেন খুনের শিকার রাফিয়া বেগম (৪৫)। রাফিয়া ৪নম্বর ওয়ার্ডের হাঁসপাড়া এলাকার আবুল হাশেমের স্ত্রী। স্বামীর সাথে রাফিয়া বেগমের বিচ্ছেদ হয়েছে ১০ বছর আগে। সেই থেকে আলাদাভাবে ছোট ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন রাফিয়া। বড় ছেলে মামুনুর রশীদ থাকেন বাবার সাথে। ছোট ছেলে হারুনুর রশীদকে নিয়ে দুঃখের দিন যাচ্ছিল রাফিয়ার। আজ থেকে ৬ মাস আগে ধারদেনা করে হারুনকে প্রবাস পাঠান। পরে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন মনুমিয়াজী বাড়ির আরেফুল কাদের চৌধুরীর বাড়িতে। ওই বাড়িতে সম্প্রতি চুরি সংঘটিত হয়। এই ঘটনায় রাফিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। মূলত কেয়ারটেকার দেলোয়ার হোসাইন ফজুর সহায়তায় চুরি হওয়া ও চোরদের চিনে ফেলা এবং মামলার বাদী হওয়ার ক্ষোভ থেকেই এ রাফিয়াকে নির্মমভাবে খুন করা হয়।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) ফজরের আজানের পর ভোরে নামাজ পড়ার জন্য অযু করতে বের হন রাফিয়া বেগম। অযু করতে বের হওয়ার পর পর আরেফুল কাদের চৌধুরীর বাড়ির পুকুরের ঘাটে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করা হয় রাফিয়াকে। সকালে ওই নারীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সকাল সাড়ে নয়টায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

নিহতের বড় ছেলে মামুনুর রশীদ বলেন, আমার মা একজন প্রতিবন্ধী। তার এক পা ভাঙ্গা। বিগত ছয়মাস আগে থেকে আমার মা ছনুয়া মনুমিয়াজি বাড়ীর মৃত আরেফুল কাদের চৌধুরীর বাড়িতে কাজ করে। ওই বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে বহুবার চুরি, ডাকাতি হয়েছে। হয়তো মা তাদের চিনতে পেরেছে। কোন একসময়ে এ বিষয়ে মা যে পরিবারে থাকতো তাদেরকে বলেছিল। আমার ধারণা হয়তো চোরের সক্রিয় সদস্যরা কৌশলে মাকে হত্যা করে পুকুর ঘাটে ফেলে চলে গেছে।

বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা হাজের বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এজাহার নামীয় দুই আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ