জোবাইর চৌধুরীঃ
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাঁশখালীর সমুদ্র উপকূলের ১০টি স্পট থেকে গত ১৫ দিনে শতাধিক ফিশিং বোট মাছ ধরার জন্য রওনা দিয়েছে। বোট মালিক সমিতি ও প্রভাবশালী জেলেরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফিশিং বোট সাগরে নামিয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ২০ মে থেকে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকা সত্ত্বেও ১০/১৫ দিন আগেই সাগরে ফিশিং বোট নিয়ে জেলেরা মাছ ধরার উদ্দেশে নেমে পড়ায় বিশেষজ্ঞমহলে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে শতাধিক ফিশিং বোট নামানোর পিছনে মদদদাতা হিসেবে নাম উল্লেখ করেছে শেখেরখীল ফাডিরমুখ এলাকার ফিশিং বোট ও মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ ইসমাঈল কোম্পানির। তাছাড়া এই মৎস্য ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সাগরে ৩১ জেলে হত্যার জলদস্যুদের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ও ছিলো তৎকালীন নিহতদের পরিবারের। বর্তমানেও সরকারি নিশেদেজ্ঞা অমান্য করে সাগরে মৎস্য আহরণে ও তার নেতৃত্বে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা । সবশেষ শুক্রবার তার মালিকানাধীন এফবি আল্লাহর দান ফিশিং বোটটি চট্টগ্রামের মাছের আডতে ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছে বলে জানিয়েছেন ওই ফিশিং বোটের এক জেলে। তাছাড়া ওই ফিশিং বোটের মাঝি মোকাররম তার এই অবৈধ কর্মযজ্ঞটি করেছেন বলে মাছের আডত সূত্রে জানাযায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রবিবার (২১ জুলাই) বাঁশখালীর শেখেরখীল, ছনুয়া, চাম্বল, খানখানাবাদ ও সরল ইউনিয়নের ১০টি স্পটের ২২টি আডতে প্রকাশ্যে মৎস্য বেঁচা-কেনা চলছে। ফিশিং বোটগুলোতে বরফ ও জাল উঠানো হচ্ছে। লাইসেন্স ও লাইসেন্স ছাড়া ১৬৮টি ফিশিং বোটের মধ্যে শতাধিক ফিশিং বোট উপকূল এলাকা ছেড়ে মাঝি-মাল্লা নিয়ে সাগরে রওনা হয়েছে। প্রশাসনিক বাধা অমান্য করে এসব ফিশিং বোটগুলো মাছ ধরতে সাগরে নামিয়েছে মাঝি মাল্লারা। বাকি যে ক’টি আছে ওই বোটগুলোও সাগরে যাবার উদ্দেশে প্রস্তুতি নিয়েছে।
বাঁশখালী ফিশিং বোট মালিক সমিতির সহ- সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি আওয়ামী সভাপতি আবুল হোসেন ভোট্টু বলেন, বাংলাদশের বিভিন্ন সমুদ্র উপকূলের ফিশিং বোটগুলো এখন সাগরে মাছ ধরছে। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার জেলেরা সাগরে নামেনি। তাই অন্তত ৫ দিন আগে কিছু জেলে নেমেছে তাতে দোষের কিছু নেই। তাছাড়া ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশ সীমান্তে এসে বাধা ছাড়া মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, অথচ প্রশাসনের কোনও পদক্ষেপ নেই। আমাদের কাছে ভিডিওসহ তথ্য আছে ভারতীয় জেলের এই নিষেধাজ্ঞার সময় বাংলাদেশ সীমান্তে মাছ ধরেছে।
বাঁশখালী উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. মাহব্বুর রহমান বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে ফিশিং বোট নামানো খবর পেয়েছি। বিষয়টি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোষ্ট গার্ড ও নৌবাহিনীকে জানিয়ে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেছি।
চট্টগ্রাম কোষ্টগার্ড পূর্ব জোনের স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল ইসলাম বলেন, সাগরে ফিশিং বোট নামার খবর পেয়েছি। আমাদের টহল দল সাগরে কাজ করছে। প্রত্যেকটি ফিশিং বোটকে জরিমানা করা হবে। নিষেধাজ্ঞার আগে কাউকে সাগরে নামতে দেওয়া হবে না।
0 মন্তব্যসমূহ