জমে উঠেছে বাঁশখালীর ঈদ বাজার

জাহেদুল ইসলাম মিরাজঃ
 জমে উঠেছে ঈদ বাজার। বাঁশখালীর সকল মার্কেট গুলোতে সকাল থেকে সেহেরির আগ পর্যন্ত  মার্কেট গুলোতে চলছে ক্রেতাদের আনাগোনা । দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে বাজারে দেশী পোষাকের চাহিদা বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে বেচা-কেনা। বাঁশখালীর  বিভিন্ন মার্কেট গুলোতে চাকচিক্য আর আলোর ঝলকানিতে জমে উঠেছে ঈদের কেনা-বেচা। শেষ মুহুর্তে এসে মার্কেট গুলোতে পা ফেলারও জায়গা নেই। নিজেদের পছন্দমতো পোশাক কিনতে সবাই ছুটছেন। আর ঈদ কেনাকাটায় পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে আছেন নারীরাই।

ঈদ কেনাকাটায়  আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে বাঁশখালী উপজেলাস্থ মার্কেট গুলো। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে কেনাকাটায় গ্রামের ক্রেতাদের আস্থা ও নির্ভরতা বজায় থাকে সারা বছরজুড়েই।বাঁশখালী উপজেলার সদরে বিভিন্ন স্থানে থাকা মার্কেট গুলো জলদী উপজলা, মিয়ারবাজার, কালীপুর, গুনাগরি, চাম্বল বাজার,টাইম বাজার, প্রেমবাজারের প্রধান সড়কে এই মার্কেটগুলোকে  সাজানো হয়েছে বিভিন্ন লাইটিং এর মাধ্যমে । পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে ফুটপাতের দোকানগুলোকেও আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

রোজার ঈদের কেনাকাটার ভিড় জমতে থাকে  বাঁশখালী অবস্থানরত মার্কেট গুলোতে অন্তত একবার ঢুঁ না মারলে কেনাকাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায় ক্রেতাদের।

কী নেই এসব মার্কেটে? শাড়ি, কাপড়,থ্রি পিস, পাঞ্জাবি - প্যান্ট, শার্ট, কসমেটিক্স, জুতা, জুয়েলারি, কোকারাইজ,  টয়লেট্রিজ সামগ্রী ,টেইলারিং,প্রসাধন সামগ্রী ও শোপিস সামগ্রী, তৈজসপত্রসহ গৃহস্থালি ব্যবহারের অন্য টুকিটাকি দ্রব্যাদিও।

উপজেলা সদর ও গুনাগারির অত্যাধুনিক শপিং সেন্টারগুলোতে এখন ৫০০ টাকা  থেকে শুরু করে প্রায় ৫০হাজার টাকা দামের বেশি শাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ৫০০ থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি, সেলোয়ার কামিজ ও থ্রিপিস ৫০০টাকা থেকে ৩০ হাজারের অধিক দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

তার মধ্যে এই বছর ঈদ মার্কেটে ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর,ও জয়পুর থেকে বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনের শাড়ি এসেছে। এগুলোর মধ্যে জুট কাতানের দাম পড়ছে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা, রাজস্থান সিল্ক ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা, ভেলবেট সিল্ক ২৫ থেকে ৩৫ হাজার, চেন্নাই কাতান ১০ থেকে ১৫ হাজার, বেনারসি ১৫ থেকে ৪০ হাজার, নেটের শাড়ি ৪ থেকে ১০ হাজার, ব্যাঙ্গালোর কাতান ৫ থেকে ১০ হাজার, অপেরা কাতান ১৫ থেকে ৩০ হাজার, টাঙ্গাইল সিল্ক ৭০০ থেকে ২ হাজার এবং দেশি সুতি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা।

মেয়েদের পোশাক বিক্রেতা আল-আমিন ক্লথ স্টোর,শৈশব ক্লোথ স্টোর,এবং বিগ বাজার গিয়ে জানা যায় এবছর ভারতীয় ড্রেসেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গ্রাম কিংবা শহুরে থাকা সব শ্রেণির তরুণীরা ভারতীয় পোশাক লেহেঙ্গা,লাছা, গাউন খুঁজছেন। এ বছর নারী পোশাকের মধ্যে থ্রি পিসের মূল্য সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা।

আবার ছেলেদের পোশাক বিক্রিতেও কমতি নেই, শার্ট পেন্টের পাশাপাশি পাঞ্জাবী ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে । ইতিমধ্যে ছেলেদের পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবির চাহিদাই সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন বাঙালি  বাবু ক্লথ স্টোরের বিক্রেতা । তিনি বলেন এই প্রতিষ্ঠানে বৈচিত্র্যময় সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে।

প্রেম বাজারে শাড়ীর কিনতে আসা সুরাইয়া জানান, দোকানে বিক্রি হচ্ছে নানা কারুকাজ করা বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি শাড়ি। তবে দেশীয় সুতী শাড়ীর প্রতি আমার আকর্ষণ বরাবর। এগুলোর দামও রয়েছে মোটামুটি। শাশুড়ির জন্য শাড়ী কিনেছি এই মার্কেট থেকে।

ক্রেতা মোরশেদ তিনি বলেন, বাঁশখালীর জি এস প্লাজা, লক্ষী স্কোয়ার মার্কেট করতে এসে মনোরম পরিবেশ ও চাহিদা মোতাবেক কাপড় ক্রয় করতে পেরে আনন্দিত আমি। এই মার্কেট গুলোতে একই ছাদের নিছে সব ধরনের পোশাকের ও কসমেটিক্স এর সমাহার। তাই আমরা পরিবার নিয়ে এখানো এখানে ছুটে আসি। 

গুনাগারি শপিংমহলে শাড়ি কিনতে আসা নব বিবাহিত আখি আকতার সাথে কথা হলো তিনি জানান, নিজের জন্য শাড়ি এবং ভাসুরের মেয়ে দুটোর জন্য সালোয়ার-কামিজ আর জুয়েলারি কেনার করার জন্য আসছি। কালেকশন বেশ ভাল।

আবার চাম্বল বাজারে ক্রেতা সরকারী চাকুরে আনোয়ার হোসেন তিনি জানান, সরকারি চাকরিরত অবস্থায় থাকার কারণে ঈদের আগে খুবই স্বল্প সময়ের ছুটিতে এসে এখন ভিড়ের মধ্যে আটকে যাওয়া অবস্থাতা।তারপরও উপচে পড়া ভিড়ে এসে কেনাকাটা সেরে ফেলার চেষ্টা করছি। এখানে সামর্থের মধ্যে পছন্দের কাপড়টা কিনতে আসা।

বরাবরের মতো লক্ষী স্কয়ারে ও জি এস প্লাজা, গুনাগারি, বাঁশখালী নিউ সুপার মার্কেট গুলোতে পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, থ্রি পিস,নানারকম ব্র্যান্ডের জুতা, কসমেটিকস  আর জুয়েলারির দোকানের সামনে দেখা গেছে ক্রেতা সমাগম। নতুন অনেক মার্কেট গড়ে উঠলেও ব্যতিক্রমী ও মানসম্পন্ন শাড়ি এবং পাঞ্জাবির জন্য ক্রেতারা এখনো এই মার্কেট গুলোতে আসছেন বলে জানিয়েছেন অনেকদিনের পুরোনো শাড়ির দোকানদার আল- আমিন ক্লথ স্টোরের মালিক মো: জসিম উদ্দিন।

জি এস প্লাজা মার্কেটের সভাপতি বলেন, অনেক বছর ধরে মানুষের কেনাকাটায় প্রধান কেন্দ্র হয়ে আছে উপজেলাস্থ মার্কেট গুলো। তার কাছ থেকে আরও কথা বলে জানা যায় এই বাঁশখালী উপজেলাতে প্রধান সড়কের পাশাপাশি ৩০টির অধিক মার্কেট নিয়ে সাজানো বাঁশখালী । ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ততই বাড়ছে ।

ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা প্রতিবারের ন্যায় এবারও আমরা জোরদার রেখেছি  ছাড়াও আমরা নিজস্ব ভাবে ব্যবস্থা রেখেছি। ফলে ক্রেতা সাধারণ স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পারেবে।

সমাজ কর্মীরা জানান, সব বয়েসীদের কাছে ঈদের কেনাকাটার জন্য ঐতিহ্যবাহী মার্কেটের সমাহার এখন বাঁশখালী। যার কারনে প্রথমত এখন ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে তারা যে যার মত করে শপিং করে নিচ্ছেন। যাতে করে আর চট্রগ্রামে গিয়ে এখন শপিং করতে হয় না। ভালো মানের সব ধরনের সামগ্রী এখন আমাদের  সদরে পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ যতো ঘনিয়ে আসছে ভিড় ততো বাড়ছে । সেহেরী সময় অবধি এখানে বিরামহীন কেনাকাটায় জমজমাট হয়ে উঠেছে ঈদ বাজার।
আর মাত্র কয়েক দিন সময় হাতে আছে, এরই মধ্যে শেষ করতে হবে ঈদের সকল কেনাকাটা। আর ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে মার্কেটলোতে ততই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ কেনাকাটার জন্য 

বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, ঈদের কেনাকাটা করতে ক্রেতাদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে এবং সব সময় আইনশৃঙ্খলা এই বিষয়ে সজাগ রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ