বাঁশখালীতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীরা মানছেন না নিয়মনীতি

বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রচার-প্রচারণায় তত গতি পেলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা সকলেই আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের হওয়ায় সাধারণ কর্মীরা অনেকটা বেকায়দায় পড়েছে। নির্বাচনের আচরণ বিধি লংঘনের জন্য বিশেষ করে অধিক মাইক ব্যবহার করায় তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব, খোরশেদ আলম, মৌলভী নুর হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদত রশীদ চৌধুরী, ও রেহেনা আক্তার কাজমীকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার। বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুই প্রভাবশালী নেতা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান,আবদুল্লাহ কবির লিটন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় প্রচারণার নতুন মাত্র পেয়েছে ।
তবে এক্ষেত্রে মুজিবুর রহমান নৌকার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিবের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন । অপরদিকে আবদুল্লাহ কবির লিটন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা শাহাদত রশীদ চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এদিকে এবার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করা না হলেও এখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব,ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী রেহেনা আক্তার কাজেমী সহ নিজেদের প্যানেল দাবি করে প্রচার প্রচারণা করায় গত শনিবার বাহার ছড়ায় দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষের রূপ নিলেও পরবর্তীতে দু,গ্রুপ সরে পড়ে । অপরদিকে বৈলছড়িতে চেয়ারম্যান প্রার্থী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সমাবেশের মঞ্চে উঠা নিয়ে দু,গ্রুপের মাঝে হাতাহাতি হয় । এ ঘটনা নিয়ে শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করে । পরে প্রার্থী নিজে সেখান থেকে সরে পড়লে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিশেষ করে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে বাঁশখালীর সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব সুলতান উল কবির চৌধুরীর পুত্র দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে বিগত তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালনকারী এবং আওয়ামীলীগ নেতা মৌলভী নুর হোসেনও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সাধারণ কর্মীরা কিভাবে তাদের সম্পর্ক বজায় থাকবে তা নিয়ে রয়েছে নানা বিভ্রান্ত। অপরদিকে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুর, দক্ষিণ জেলা যুবলীগ নেতা মোঃ সোলাইমান এবং যুবলীগ নেতা শাহাদত রশীদ চৌধুরী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় এখানে সাধারণ নেতাকর্মীরা দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন না দিলেও কে কার পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে তা নিয়ে চলছে নানা ধরণের আলোচনা। এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেও ২৮ ফেব্রুয়ারি বাছাইয়ের দিন তার মনোনয়ন বাতিল হলে হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়ে ১৪ মার্চ এক রায়ের প্রেক্ষিতে উড়োজাহাজ প্রতীকসহ ১৬ মার্চ বিশাল শোডাউন করে মাঠে আসে সে। অপরদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী রেহেনা আক্তার কাজেমী ও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরীমন আক্তারও প্রচারণার মাঠে নিজের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে রাতদিন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম অভিযোগ করে বলেন তার পোস্টারের উপর অপর প্রার্থীর পোষ্টার সাটানো হয়েছে ও ব্যানারও ছিড়ে ফেলা হয়েছে এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেছে বলে জানান । এবার আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে বাঁশখালীর ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে ১১০টি কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, বর্তমানে নির্বাচন যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে প্রচার প্রচারণায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের কোন খবরাখবর পাওয়া যায়নি।
/আজাদী! 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ